গুলিস্তানে বাস উল্টে ২ কাবাডি খেলোয়াড় আহত

আগের সংবাদ

মণ্ডপে হামলার নেপথ্যে কারা

পরের সংবাদ

আতঙ্কের জনপদ মাগুরার জগদল গ্রাম : ফের সহিংস ঘটনা ও লুটপাটের আশঙ্কায় বাড়ি ছাড়ছেন মানুষ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীপক চক্রবর্তী, মাগুরা থেকে : নির্বাচনী প্রার্থিতাকে কেন্দ্র করে মাগুরা সদর উপজেলার জগদল গ্রামে সহিংসতায় চারজন নিহতের ঘটনায় পুরো গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক। ফের সহিংসতা ও লুটপাটের ভয়ে যে যার মতো মালামাল নিয়ে বাড়ি ছাড়ছেন।
শুক্রবার যে চারজন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর গ্রাম্য মাতুবর সবুর মোল্লা, তার আপন ভাই কবির মোল্লা ও আপন চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা এবং ২৫ বছরের যুবক ইমরান। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
গতকাল শনিবার জগদল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের সবাই রয়েছেন চরম আতঙ্কে। এ গ্রামে ৩ শতাধিক পরিবারের বসবাস। গ্রামের হাকিমের মোড়, সর্দারপাড়া, মাঝি বাড়ি, দমদমা পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে পুলিশ প্রহরা। তবু অধিকাংশ বাড়ির পুরুষ মানুষ বাড়ি ছেড়েছেন।
অন্যদিকে বাড়ির নারী সদস্যরা লুটপাট আতঙ্ক ও আবারো সংঘর্ষের ভয়ে ঘরের মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। জগদল সর্দারপাড়া এলাকার জাকির হোসেন, সায়েরা খাতুনসহ অন্যরা জানান, এলাকায় লোকজন নেই এ কথা ঠিক। কিন্তু এ ধরনের খুনের ঘটনার পর অতীতে অন্য এলাকার দুর্বৃত্তরা এলাকায় এসে বাড়িঘর লুটপাট করেছে। এ কারণে তারা বাড়িতে মালামাল রাখতে সাহস পাচ্ছেন না।
এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশ প্রহরা দেখা গেছে। নিরপাত্তার বিষয়ে সেখানে উপস্থিত মাগুরা সদর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, গ্রামের সর্বসাধারণকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সাধারণ মানুষ যাতে আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম না ছাড়ে সে জন্য সবাইকে অবহিত করছি। এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ফের সহিংসতা প্রতিরোধে নজরদারি বহাল রয়েছে।
এদিকে নিহত সবুর মোল্লার স্ত্রী মেলিনা বেগমসহ পরিবারের দাবি, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে নজরুলসহ তার সমর্থকরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে জগদল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি মোল্লাদের গোষ্ঠীগত বিরোধ। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে থেকেই চলছে। সামনে নির্বাচন, এ কারণে আমার প্রতিপক্ষরা এর সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কুৎসা রটাচ্ছে।
সর্দারপাড়া মসজিদের ইমাম বাকি বিল্লাহ বলেন, অনেক আগে থেকেই নজরুল মোল্লা ও সৈয়দ আলী হাসানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় এ বিষয়ে বয়ান দিয়েছি। দুপক্ষের কাছে করজোড়ে শান্ত থাকা ও বিরোধে না জড়ানোর জন্য মিনতি করেছি। কিন্তু বিকালেই এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য সরকারদলীয় নেতাদের নেতৃত্বে পরস্পরবিরোধী একটি সামাজিক দল গঠিত হয়ে থাকে। যেখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় দলের সদস্যরা থাকেন। এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ সূত্রে তারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনের সময় তা ভয়াবহ রূপ নেয়। শুক্রবারের সংঘর্ষটি সামাজিক দলাদলি নিয়ে সংঘটিত এমন একটি নৃশংস ঘটনা।
মাগুরা সদর থানার ওসি মো. মনজুুরুল আলম জানান, পুলিশের উপস্থিতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে পুনরায় সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়