ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

আগের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে

পরের সংবাদ

শাহজাদপুরে অবহেলিত বেদে সম্প্রদায়

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুল কুদ্দুস, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : শাহজাদপুরে অবস্থান করছে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত বেদেরা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সবকিছুতেই অবহেলিত তারা। সাপ খেলা ও কবিরাজিই হলো তাদের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে আগের মতো সাপ মিলছে না। আবার গ্রামের সচেতন জনগণও বেদেদের কবিরাজি চিকিৎসা গ্রহণ না করায় কমে গেছে তাদের উপার্জন। ফলে অনাহার অর্ধাহারেই কাটছে তাদের জীবন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর পরিত্যক্ত ইটভাটায় ঢাকার সাভার থেকে প্রায় অর্ধশত পলিথিনের তাঁবু টানিয়ে বসবাস করছে প্রায় ৩০০ বেদে সম্প্রদায়।
পরনে নোংরা ও ছেঁড়া কাপড় পরিহিত বেদে পল্লীর নাজিম (২৩) প্রতিবেদককে জানান, দু’বেলা দু’মুঠো ভাতই পেট পুরে খেতে পারি না, খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের ঝুপরি ঘরে অস্থায়ী বসবাস। তারপর আবার পোশাক! রোদ, বৃষ্টি ও শীতে খুব কষ্টে কাটে আমাদের জীবন। এভাবেই চলছে দিনের পর দিন।
বেদে জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯৫ ভাগ ভুগছে পুষ্টিহীনতায় আর ৯০ ভাগ নিরক্ষর। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত তারা। সরকার শিক্ষা খাতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিলেও এ ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে। এতে বাড়ছে বাল্যবিয়ে, অধিক জন্মহারসহ নানা সমস্যা। বেদে সম্প্রদায় দেশের প্রায় বিভিন্ন এলাকায় ১-২ মাস অবস্থান করে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় নৌকায় ছিল তাদের বসবাস। বর্তমানে যাতায়াত সুবিধায় পরিবর্তন হচ্ছে আবাসস্থল। তাই নৌকা বাদ দিয়ে জলের পরিবর্তে স্থলেই অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে তারা। উপজেলার তালগাছী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ও আব্দুর রাজ্জাক জানান, তালগাছি হাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে দেখা যেত বেদেদের নৌবহর। গত কয়েক বছর ধরে তাদের আর এভাবে দেখা যাচ্ছে না। তারা এখন বিভিন্ন এলাকার পরিত্যক্ত জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঝুপরি ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। সাভার থেকে আসা বেদে আলিম (২৮) জানান, বেদেদের আগে যে ব্যবসা ছিল তা এখন পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এখন আর গ্রামে ব্যবসা হচ্ছে না, সাপও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই জাত ব্যবসা ছেড়ে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছেন।
সমাজসেবা বিভাগের হিসাব মতে, দেশে যাযাবরের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬৩ লাখ। যার মধ্যে দলিত ৪০ লাখ, বেদে ৮ লাখ ও হরিজন ১৫ লাখ। ১৬৩৮ সালে আরাকানরাজ বল্লার রাজার সঙ্গে বেদেরা প্রথম ঢাকায় আসে। সে সময় বিক্রমপুরে তারা বসবাস শুরু করে। তারপর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ও আসামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়