ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

আগের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে

পরের সংবাদ

বিপাকে খামারি-জেলেরা : সোনাগাজীতে ভূমিদস্যুদের দখলে ফেনী নদীর চর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ মনির আহমদ, সোনাগাজী (ফেনী) থেকে : সোনাগাজীর চরাঞ্চলে বড় ফেনী নদীর উপকূলে জেগে ওঠা হাজার হাজার একর ভূমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় দখল করে নিচ্ছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। এভাবে চরাঞ্চল দখলের কারণে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে গবাদিপশুর চারণভূমির মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গবাদিপশু পালক ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১২ সাল থেকে বড় ফেনী নদীর সোজাকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে চর আবদুল্লাহ, চর এলেন, আবুইল্লার চর, থাক খোয়াজের লামছি ও নূনার চরে প্রায় ৩০ হাজার একর চর জেগে ওঠে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব চরে চলছে দখল বাণিজ্য। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ হাজার একর জমি জবরদখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা।
এসব চরে উপকূলীয় এলাকার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জোয়ারের পানিতে জাল বসিয়ে নানা রকম সামুদ্রিক মাছ ধরতেন মৎস্যজীবীরা। আর চর এলাকার শত শত গবাদিপশু পালক ও খামারিরা সেখানে তাদের পশু পালন করে লাভবান হতো। পশুপাখিদের অভয়ারণ্য ছিল এসব চরভূমি। কিন্তু ভূমিদস্যুরা প্রতিনিয়ত মৎস্য ঘের করে ও পাড় বেঁধে পুকুর খনন করে হাজার হাজার একর জমি জবরদখল করে নেয়ায় মৎস্যজীবী ও খামারিদের মাথায় হাত পড়েছে। দখলকৃত জমিতে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে এবং খামারিরা গবাদিপশু নিয়ে গেলে প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হচ্ছেন।
সম্প্রতি আবুইল্লার চর এলাকায় দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে মহিষের খামারি ইমাম হোসেনকে অপহরণ করে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর করে করেছে চিহ্নিত চাঁদাবাজ করিমুল হক ও তার ভাড়াটে লোকজন। ক্ষতিগ্রস্ত ইমাম হোসেন এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অনেক খামারি গরু, মহিষ ও ভেড়া বিক্রি করে খামার গুটিয়ে নিয়েছেন।
মৎস্যজীবী সাহাব উদ্দিন ও আবুল কাশেম বেল্টু অভিযোগ করেন, তাদের মতো শত শত জেলে চরাঞ্চলের জমিতে জাল বসিয়ে সামুদ্রিক মাছ আহরণ করে সোনাগাজীর হাটবাজারে বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করতেন। কিন্তু ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট হাজার হাজার একর জমিজবর দখল করে নিয়েছে। জাল মারতে গেলেই প্রতিনিয়ত মারধরের শিকার হতে হয় তাদের।
জনার্ধন জলদাশ অভিযোগ করেন, নদী উপকণ্ঠে জেগে ওঠা চরে জলদাশ পাড়ার শত শত জেলে সামুদ্রিক মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
ভূমিদস্যু ও তাদের লালিত সন্ত্রাসীদের প্রতিনিয়ত হামলায় জেলেরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভূমিদস্যুদের হামলা ও হয়ারানি থেকে বাঁচতে মৎস্যজীবীরা গণস্বাক্ষর করে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ওই অভিযোগের কোনো প্রতিকার পাননি তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম জহিরুল হায়াত বলেন, মৎস্যজীবীদের গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ হাতে পেয়ে ওই দিনই আইনগত ব্যবস্থা নিতে সোনাগাজী মডেল থানার ওসিকে বলেছি।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, মৎস্যজীবী ও খামারিরা হামলার শিকার হলে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে যে অভিযোগটি পেয়েছি সেটির তদন্ত চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়