ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

আগের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে

পরের সংবাদ

অজ্ঞাত কারণে ফ্লাইট বন্ধ ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে : দেশি-বিদেশিদের যাতায়াতে ভোগান্তি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ঈশ্বরদীতে যাত্রী, ব্যবসায়ীসহ দেশি-বিদেশি মানুষের চাহিদা থাকার পরও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চালু হচ্ছে না। এতে যাত্রীরা সহজে অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা-ঈশ্বরদী রুটে যাতায়াত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে অজ্ঞাত কারণে সাড়ে ৭ বছর ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। অথচ দেশের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে ঈশ্বরদীতে। কিন্তু বিমান না থাকায় রূপপুর প্রকল্প সংশ্লিষ্টসহ দেশি-বিদেশি যাত্রী, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা জরুরি কাজে দ্রুত ঢাকায় যাতায়াত করতে পারছেন না। সড়ক বা রেলপথে দীর্ঘ সময়ের ঢাকা যাতায়াতে তারা দুর্ভোগে পড়ছেন।
বিমানের নিয়মিত যাত্রী পাবনা-৪ আসনের প্রাক্তন সাংসদ মঞ্জুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আগে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল করত। বন্ধ হওয়ায় এখন তিনি অনেক কষ্টে ঢাকা যাতায়াত করেন।
তিনি জানান, রূপপুর প্রকল্প, ইপিজেড, সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন দপ্তরে কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি রয়েছেন। কম সময়ের সুবিধার্থে ঈশ্বরদী থেকে ফ্লাইট চালু করা জরুরি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বলেন, রূপপুর প্রকল্পে অনেক দেশি-বিদেশি নিয়মিত ঢাকা আসা যাওয়া করেন। তাদের দ্রুত কাজের জন্য ফ্লাইট চালু করা দরকার বলে মনে করি।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, প্রধানমন্ত্রী রূপপুর প্রকল্পসহ অনেক কিছু আমাদের দিয়েছেন। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু মানুষের দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার্থে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালুর জন্য তার কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
ঈশ্বরদী নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ কিরণ বলেন, সাধারণ নাগরিকদের যাতায়াতে সুবিধাসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের প্রসার ঘটাতে ঈশ্বরদীতে সপ্তাহের ৭ দিনই ফ্লাইট চালু রাখা দরকার।
ঈশ্বরদীর সিনিয়র সাংবাদিক খোন্দকার মাহাবুবুল হক দুদু বলেন, বিমানবন্দরে নিয়মিত ফ্লাইট চালু করার বিষয়টি ঈশ্বরদীর মানুষের প্রাণের দাবি।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, ৪৩৫ একর জায়গার ওপর বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠিত। তবে বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কম থাকায় বর্তমানে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে ধরনের ফ্লাইট রয়েছে, সেগুলো ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে অবতরণের জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সম্প্রসারণ করা দরকার।
সূত্র আরো জানায়, ১৯৬৫ সালের পর থেকে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে ফ্লাইট শুরু করে। সে সময় নিয়মিত দুটি ফ্লাইট সকাল ও বিকেলে ঈশ্বরদী-ঢাকা চলাচল করত।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানবন্দরটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করে আবার ৭২ সাল থেকে বিমান চলাচল শুরু করে। সে সময় পাবনা, কুষ্টিয়া, নাটোর ও রাজশাহীর প্রচুর যাত্রী হতো। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চলার পর ১৯৮৭ সালে লোকসানের অজুহাতে এ পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়।
মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে আবারো ফ্লাইট চালু করা হয়। ৩ বছর চলাচলের পর লোকসানের কারণে ১৯৯৬ সালের ৩ নভেম্বর আবারো ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়। এরপর মানুষের দাবির মুখে ১৯৯৮ সালের ১০ মে বেসরকারি বিমান এয়ার পারাবতের সার্ভিস চালু করা হয়।
মাত্র ৩৮ দিন চলাচলের পর একই বছরের ২৮ জুন ফ্লাইট আবার বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে দীর্ঘ ১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ফের ফ্লাইট উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু কয়েক মাস ২০১৪ সালের ২৪ মার্চ থেকে আবারো ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক দিলারা পারভীন বলেন, বিমানবন্দর সময় চালু রয়েছে। তবে ফ্লাইট চালু বা অপারেশনের জন্য কিছু কাজ করতে হবে।
এর মধ্যে রানওয়ে প্রশস্ত, লাইটিং ও ফায়ার সার্ভিস সিস্টেম উন্নত করাসহ কিছু কাজ রয়েছে। তিনি জানান, ফ্লাইট চালুর জন্য উচ্চপর্যায়ে ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে ও সরকারের আন্তরিকতা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়