ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

গ্রামীণ রাস্তায় চালকের আসনে জায়েদা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) থেকে : শখের বশে নয়, জীবন-জীবিকার তাগিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছেন। পেশা হিসাবে বেছে নিচ্ছেন গাড়ি চালোনাকে। এদের দেখা মেলে শহরে। তবে গ্রামের রাস্তায় চালকের আসনে এখন নারীদেরও দেখা যাচ্ছে। তাদের একজন জায়েদা। স্বামী পরিত্যক্তা এই নারী এখন চালকের আসনে বসে যাত্রী পরিবহন করেন। তার বাড়ি উপজেলার জোতকাদিরপুর গ্রামে। স্বামী শাহাজামাল দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যাওয়ার পর পেশা বদলে চালকের আসনে বসেছেন জায়েদা। তার সঙ্গে

কথা বলে জানা যায়, দরিদ্র পরিবার ও কালো চেহারার মেয়ে বলে কেউ তাকে বিয়ে করতে চায়নি। এ কারণে ৩০ বছর বয়সে বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন ৩৫ বছর বয়সে। গর্ভের ছেলে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে স্বামী শাহজামাল তাকে রেখে যখন অন্য জায়গায় চলে যান। তখন জীবিকার তাগিদে গ্রামের বিত্তবানদের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালানো শুরু করেন জায়েদা। এর মাঝে তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।
টানাপড়েনের সংসারে ভারতের সীমান্তবর্তী দুর্গম চর এলাকার বাংলাবাজার গ্রাম ছেড়ে ছেলে জায়দুলকে সঙ্গে নিয়ে ২০ বছর আগে চলে আসেন উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের জোতকাদিরপুর গ্রামে। ৫ কাঠা জমি কিনে শুরু করেন নতুন জীবন। বেঁচে থাকার তাগিদে কোনো পেশাকেই ছোট করে দেখেননি কখনো। এভাবেই তিনি পার করেছেন জীবনের ৫০ বছর। একসময় জানতে পারেন যোগ্যতা অনুসারে নারীরাও চালকের আসনে বসছেন। লেখাপড়া না জানলেও সেই চিন্তা পেয়ে বসে তাকে। চালকের আসনে বসে ব্যাটারিচালিত অটো উল্কার হ্যান্ডেল ধরে মাস দুই মাস আগে নেমে পড়েন রাস্তায়।
জমানো টাকা আর এনজিওর কাছ থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটো উল্কা কেনেন জায়েদা। বসেন চালকের আসনে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জোতকাদিরপুর থেকে নারায়ণপুর হয়ে বাঘা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে প্রতিদিন আয় হয় প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিদিনের অটো উল্কার ব্যাটারি চার্জ বাবদ ৫০ টাকাসহ দুজনের সংসার খরচ চলে এই আয় থেকে। খরচ বাদে বাড়তি কিছু টাকা জমাও করেন তিনি। আর্থিক অনটনের মধ্যেও ছেলেকে ভর্তি করেছিলেন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছেলে জায়দুল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। তার ইচ্ছে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করে গড়ে তোলা।
জায়েদা বলেন, দেশে বিভিন্ন যানবাহনে পেশাদার নারীচালক আরো দরকার। নারীদের জন্য পরিবহনের বিশেষ কোনো সুবিধা নেই।
শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আবু হানিফ বলেন, বর্তমানে রাস্তায় যে হারে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে, চালকের আসনে নারী থাকলে সেই হার কমে যাবে। রাস্তায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। মেয়েরা সহজে অধৈর্য হয় না। গাড়িচালক হিসেবে নারী ও পুরুষের ব্যবধান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়