বাংলাদেশকে জমি লিজ দিতে চায় আফ্রিকা

আগের সংবাদ

যে কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না

পরের সংবাদ

সরকারি রাস্তায় চাতাল নির্মাণ : ঠাকুরগাঁওয়ে অবরুদ্ধ ২০ পরিবার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি রাস্তার ওপরে মিল চাতাল নির্মাণ করেছে এক প্রভাবশালী। এতে যাতায়াত করতে না পেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রায় ২০টি পরিবার। গত সোমবার বিকালে সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে গেলে অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। সমাধানের আশায় ছুটে আসেন ভুক্তভোগী বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ।
ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন জানান, এলাকাটিতে প্রায় ২০টি পরিবারের বসবাস। তার নিজের বাসাতে ১৫ জন সদস্য। যেখানে কিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ তার অসুস্থ বাবা-মা রয়েছেন। বাসায় যাওয়ার ৮ ফুটের একটি সরকারি রাস্তা আছে, তবে সেটা তারা ব্যবহার করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, সরকারি রাস্তাটি স্থানীয় যুবলীগ নেতা সাইদুল ইসলামের দখলে। তাই বেশ কিছু সময় থেকে আমরা অন্যের মালিকানাধীন ২ ফুটের রাস্তা ব্যবহার করছিলাম। আমার বাবা-মা অসুস্থ হলে কাঁধে করে আধা কিলোমিটার হেঁটে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে ওঠাতে হয়েছে। তবে এখন সেই ২ ফুটের রাস্তাটির মালিক জায়গা নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছে। এমন অবস্থায় যদি সরকারি রাস্তাটি আমরা না পাই, তাহলে নিজেদের বাসায় যাওয়া-আসার আর কোনো সুযোগ থাকবে না।
সরজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন যানবাহনচালিত একটি পিচঢালা রাস্তার সঙ্গে সংযোগ হয়ে গ্রামটির দিকে একটি রাস্তা শুরু হয়েছে। তবে রাস্তাটি ২শ গজ সামনে গিয়েই থেমে যায়। সেখানে একটি বিরাট ধান শুকানোর চাতাল। চাতালটি শেষে আবার সেই রাস্তাটির সীমানা চোখে পড়ছে।
সেই এলাকার বাসিন্দা কালাম ও সোহেল জানান, সাইদুলকে বেশ কয়বার অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। এরপর আমরা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করেছি। তবে চেয়ারম্যানের চেষ্টাও বৃথা গেছে। আমাদের কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ করেছি। তবে এখনো কোনো সমাধান নেই। এমন অবস্থায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমরা নিজেদের বাসায় এখন অবরুদ্ধ।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এমন একটি অভিযোগ আসার পর আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। সাইদুল ইসলামের স্থাপনাটি সিএস রেকর্ডধারী রাস্তার উপরে নির্মিত। বিষয়টি আমরা ভূমি অফিস থেকে নিশ্চিত হয়েছি। তবে পরিষদ থেকে বেশ কয়বার চেষ্টা করেও রাস্তাটি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছি। গ্রামবাসীর স্বার্থে প্রশাসনিকভাবে সমাধান বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। সরকারি রাস্তার ওপরে তার স্থাপনা থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এটা আমার কেনা জমি। বিক্রেতা জমিতে থাকা সরকারি রাস্তার বিষয়টি গোপন করে জমিটি আমার কাছে বিক্রি করে আমাকে ঠকিয়েছে। অজান্তেই আমি স্থাপনা গড়ে তুলেছি। এখন বলা মাত্রই স্থাপনা সরানো সম্ভব নয়। আলোচনা সাপেক্ষে লম্বা সময় বা অন্যদিকে রাস্তা দেয়া যেতে পারে। বিষয়টি আলোচনা করে দেখব।
যদিও সরজমিন দেখা গেছে, অন্য কোনো দিক দিয়ে রাস্তা দেয়ার মতো তেমন কোনো সুযোগ নেই। সাইদুলের নির্মিত ধানের মিলের আট ফুট চাতাল ছেড়ে দিলেই সঠিক মাপে রাস্তাটি বের করা সম্ভব।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, আমি কিছুদিন আগেই নতুন করে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।
অভিযোগটি আগের অফিসারের কাছে এসেছিল। তাই আমি পরিষ্কারভাবে তেমন কিছু জানি না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়