নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল : চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনার নামে কোটি টাকা হরিলুট

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ২৬টি চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় প্রক্রিয়ায় দুই থেকে পাঁচগুণ বেশি দাম দেখিয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জরুরি চিকিৎসাকাজে ব্যবহৃত দুটি ভেন্টিলেটরসহ অবেদনযন্ত্র কেনা হয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাম দেখিয়ে, বাজারে যার প্রকৃত দাম সর্বোচ্চ ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩০ টাকা। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক আবু হাসানুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান। দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে করা মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ এন্ড টিসি) মহাখালী কার্যালয়ের সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট রিপেয়ার কাম ট্রেনিং ইঞ্জিনিয়ার এ এইচ এম আব্দুল কুদ্দুস ও রাজশাহীর কেশবপুর মোড় এলাকার প্যারাগন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাহেদুল ইসলাম।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩০ এপ্রিল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক আবু হাসানুজ্জামান মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে রাজশাহীর কেশবপুর মোড় এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্যারাগন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাহেদুল ইসলাম কার্যাদেশ পান। সে সময় ক্রয় কমিটির সভাপতি ছিলেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত আবু হাসানুজ্জামান। তদন্তে আরো দেখা যায়, ট্রান্সকুটেনাস ইলেকট্রিক্যাল নার্ভ স্টিমুলেটর (টেন্স) নামে দুটি যন্ত্র কেনা হয় ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু এই যন্ত্রের বাজারমূল্য প্রতিটি ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ইলেকট্রোকোটেরি ইউনিট নামে একটি যন্ত্র ৭ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হয়, যার বাজারমূল্য ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বাজারে প্রতিটি আইআরআর যন্ত্রের দাম ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অথচ প্রতিটির দাম ৬ লাখ দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে ৫টি যন্ত্র। জাপানের তৈরি ডেন্টাল ইউনিট নামে একটি যন্ত্র কেনা হয়েছে ৪৮ লাখ টাকায়, যার বাজারমূল্য মাত্র ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি ডায়াথারমি যন্ত্র ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেখিয়ে চারটি যন্ত্র ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কেনা হয়, যার প্রকৃত বাজার দর প্রতিটি ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮২৫ টাকা। দুটি টেন্সটেম ইকো বেসিক মডেলের টেন্স কেনা হয়েছে ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে বাজারে যার প্রতিটির দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এ ছাড়া, ৭৫০০ মডেলের চারটি পালস অক্সিমিটার কেনা হয়েছে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে বাজারে যার প্রতিটি কিনতে খরচ পড়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪০ টাকা। কোরিয়ার তৈরি ইসিজি ১২ চ্যানেল ৫টি যন্ত্র কেনা হয়েছে ৩৯ লাখ টাকা দিয়ে। বাজারে এর একটি যন্ত্রের দাম ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। মাল্টিপ্যারামিটার পেশেন্ট মনিটর নামে পাঁচটি যন্ত্র কেনা হয়েছে ৬০ লাখ টাকায়। বাজারে এর একটি যন্ত্রের দাম ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা দিয়ে ১০ ধরনের ২৬টি যন্ত্র কেনা হয়েছে, যেখানে প্রাথমিক ভ্যাট ও আয়কর বাদে সরকারের ১ কোটি ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭০ টাকার ক্ষতির অভিযোগ এনেছে দুদক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়