কারচাপায় স্কুলছাত্র নিহত, সড়ক অবরোধ

আগের সংবাদ

শঙ্কা নিয়ে আনন্দের পাঠে ফেরা

পরের সংবাদ

সিনেমা হলের দৈন্যদশা কাটবে কবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক সিনেমা হল, আরো কিছু সিনেমা হল বন্ধ করার প্রস্তুতিও চলছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে দেশের চালু সিনেমা হলের সংখ্যা এক হাজার ২৩৫টির স্থলে ১১৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশে নির্মিত ছবির সংখ্যা বছরে ১১০টির স্থলে ৩০-৩৫ টিতে নেমে এসেছে, যার মধ্যে ২-৩টি ছবি বাজারে ব্যবসা করে। বলিউড সিনেমা আমদানি নিয়ে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান চললেও এখন চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির বেশিরভাগ অংশই মনে করছেন হল বাঁচাতে বলিউড সিনেমা আমদানি জরুরি। আবার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির একাংশ এখনো মনে করছে, বলিউড সিনেমা আমদানির অনুমতি হল মালিকদের ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করবে। কিন্তু সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাবে না। দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে দেশে ভালো মানের সিনেমা নির্মাণ জরুরি। চিত্রনায়ক অমিত হাসান বলেন, ‘ভারতীয় সিনেমা আমদানি হয়তো সিনেমা হল বাঁচাবে। কিন্তু দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাবে কিনা আমার সন্দেহ আছে।’ এছাড়া নেটফ্লিক্সসহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তির প্রচলন শুরু হওয়ায় সারা বিশ্বেই বড় রকমের সংকটের মধ্যে পড়েছে সিনেমা হল মালিকরা। ভারতেও এখন বলিউড সিনেমার দর্শক নেই প্রেক্ষাগৃহে। বলিউডের অনেক নির্মাতা এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য সিনেমা নির্মাণ করছেন। প্রযোজকরাও প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা মুক্তি না দিয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তি দিচ্ছেন। এমন অবস্থায় বলিউড সিনেমা আমদানির অনুমতি পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে দেশের সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন প্রদর্শক সমিতি। বছরে ১০টি বলিউড সিনেমা আমদানির অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছে হল মালিকরা। গত ১৬ আগস্ট চিঠিটি গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতি ও প্রদর্শক সমিতি ভারতীয় সিনেমা আমদানির পক্ষে অবস্থান নিলেও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। শিল্পী সমিতি বিষয়টি আরো পর্যবেক্ষণ করে নিজেদের অবস্থান জানাতে চায়। প্রদর্শক সমিতির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ আমাদের পঙ্গু করে দিয়েছে। এখন ব্যাপক দর্শকশ্রেণিকে সিনেমা হলে আনতে না পারলে সিনেমা হল যেগুলো অবশিষ্ট আছে, সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, দেশীয় ছবির স্বল্পতা এবং ব্যবসায়িক মানের গতিতে সিনেমা হল মালিকরা ঋণ গ্রহণে যেমন অনীহা প্রকাশ করছেন, তেমনি তফসিলি ব্যাংকগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের কর্তাব্যক্তি সিনেমা হলের ব্যবসায়িক সম্ভাবনার নেতিবাচক অবস্থা বিবেচনায় ঋণদানের বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আমরা নিশ্চিত ভারতীয় ছবির আকর্ষণে সিনেমা হলে দর্শকের ঢেউ নামবে, সিনেমা হল মালিকরা আগ্রহী হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ঋণ গ্রহণ করে সিনেমা হল আধুনিকায়ন করবে এবং নতুন সিনেপ্লেক্স তৈরি হবে। ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেলে ব্যাংকগুলোও সাহসের সঙ্গে ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসবে। বাজার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে, ফলে দেশেও সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা বেড়ে যাবে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় তিন বছরের জন্য প্রতি বছর ১০টি করে ভারতীয় ছবি আমদানির অনুমতি দেয়া হোক।’ প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ, প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাশ এবং সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০১০-এর জানুয়ারিতে প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত আমদানি নীতি আদেশে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত ছায়াছবি আমদানির ওপরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী নির্মাতা-কলাকুশলীরা বিরোধিতা করেন। ফলে সেই আদেশ ১০/০৬/১০ তারিখে বাতিল করে পুরাতন আমদানি নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হয়। এই ১০ বছরে দেশের চালু সিনেমা হলের সংখ্যা এক হাজার ২৩৫টির স্থলে ১১৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশে নির্মিত ছবির সংখ্যা বছরে ১১০টির স্থলে ৩০-৩৫টিতে নেমে এসেছে, যার মধ্যে ২-৩টি ছবি বাজারে ব্যবসা করে।’ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সেন্সর বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিমাণ সিনেমা একটা সময়ের জন্য আসতে পারে। এখন দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির নাজুক অবস্থা। হলে দর্শক ফেরাতে বলিউড সিনেমা নির্দিষ্ট পরিমাণে আমদানি করা যেতে পারে। পাশাপাশি দেশে ভালো মানের সিনেমা নির্মাণ করে হলে মুক্তি দিতে হবে।’
:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়