কারচাপায় স্কুলছাত্র নিহত, সড়ক অবরোধ

আগের সংবাদ

শঙ্কা নিয়ে আনন্দের পাঠে ফেরা

পরের সংবাদ

আলোকিত মেহজাবীন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গø্যামার আর নান্দনিক অভিনয় নৈপুণ্যে নজর কেড়েছেন মেহজাবীন চৌধুরী। দেশের টেলিভিশন নাটকে তার জনপ্রিয়তা এখন আকাশছোঁয়া। সম্প্রতি বলিউডের পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করার জন্যও প্রস্তাব পেয়েছেন এই তারকা। কিন্তু সিনেমার গল্প পছন্দ হয়নি বলে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। জানা যায়, নেটফ্লিক্সের জন্য ‘খুফিয়া’ নামের ছবি নির্মাণ করছেন বলিউড নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ। মেহজাবীন চলচ্চিত্রটির প্রস্তাব পেয়েছিলেন জুলাই মাসে, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলেন ছবির কাস্টিং ডিরেক্টর। মেহজাবীন বলেন, ‘সিনেমার গল্পটি জেনে মনে হয়েছে, বাংলাদেশকে সিনেমাটিতে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হতে পারে। নিজের দেশকে খাটো করে কোনো কাজ করব না। এমন একটা আবেগ থেকেই প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার দেশ, আমার দেশের মানুষকে যদি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয় তাহলে ওই সিনেমায় আমি যুক্ত হতে চাই না।’ এদিকে চলতি মাসেই ‘আলো’ নামের একটি টিভি নাটকের মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছেন এই তারকা অভিনেত্রী। নাটকটিতে নারী ট্রাফিক পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করে অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এক নারী ট্রাফিকের নানা রকম শারীরিক ও মানসিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করার বাস্তবচিত্র উঠে এসেছে নাটকটিতে। মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকটির রচয়িতাও মেহজাবীন চৌধুরী। পরিচালনা করেছেন মাহমুদুর রহমান হিমি। নারী ট্রাফিকের এই বাস্তবচিত্র তুলে ধরার জন্য মেহজাবীনসহ নাটকটির পুরো টিমকে সম্মাননা জানিয়েছে ‘পুলিশ ওইমেন নেটওয়ার্ক’। নাটকটি প্রচারের পর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনেক কর্মকর্তা তাদের ফোনে ধন্যবাদ জানান। মেহজাবীন বলেন, ‘নাটকের গল্প-ভাবনাটা আসে ২০১৯ সালে। গুলশানের একটি সিগনালের পাশে জ্যামে বসেছিলাম। হঠাৎ রাস্তার ওপারে দেখতে পায় একজন নারী ট্রাফিক সার্জেন্ট একটি পিকআপ ড্রাইভারকে আইন ভঙ্গের জন্য জরিমানা করছেন। তাকে গাড়ি থেকে নামতে বলছেন; কিন্তু ওই ড্রাইভার খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। মনে হলো, নারী বলে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তখন রাস্তায় নারী ট্রাফিক খুব বেশি দেখা যেত না। আমি দূর থেকে ছবি তুলি। তারপর ডিরেক্টর মাহমুদুর রহমান হিমি ভাইয়ের সঙ্গে আইডিয়াটা শেয়ার করি। তিনিও খুব আগ্রহী হন।’ নাটকের গল্পে দেখা যায়, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আলো। বাবার স্বপ্নপূরণ করতেই ট্রাফিক পুলিশে যোগ দেন। নারী হওয়ার কারণে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যার মুখোমুখি হন তিনি। নারী ট্রাফিক পুলিশের বুথের পাশে কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। পাবলিক টয়লেটে গিয়ে হেনস্তা হতে হয়। নারী হওয়ায় বাজে মন্তব্য করেন মাতাল ট্রাকচালক। তারপরও পেশাকে ভালোবেসে কাজ করে যান আলো। দেশের নারী ট্রাফিক পুলিশদের নানারকম প্রতিকূলতার গল্প উঠে আসে নাটকটিতে। এই নাটকে আরও অভিনয় করেছেন আহসানুল হক মিনু, মনোজ প্রামাণিক, ইকবাল হোসেন প্রমুখ। নাটকটি আরটিভিতে প্রচার হয়। নাটকের চরিত্র রূপায়নে বেশ চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল বলে জানান মেহজাবীন। তিনি বলেন, ‘এই চরিত্রটা আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ নারী ট্রাফিক চরিত্রে আগে অভিনয় করিনি। তখন নারী ট্রাফিকদের ওপর আরেকটু স্টাডি করি। তারা কীভাবে কথা বলেন, তাদের হাঁটাচলা পর্যবেক্ষণ করেছি। তারপর তো আমি আমার মতো করার চেষ্টা করেছি। নাটকটি প্রচারের পর অনেক নারী ট্রাফিক আমাকে বলেছেন, আমি অনেকটাই পেরেছি।’ কাজের স্বীকৃতি পেয়ে ভালো লাগার কথাও জানান এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘সম্মাননা বা স্বীকৃতি তো আমাকে ভীষণ রকম উৎসাহ জুগিয়েছে। এই নাটকের টিমে যারা কাজ করেছেন তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। নাটকটি প্রচারের জন্য আরটিভিকেও কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই যারা আমাদের এই কাজটিকে সম্মাননা দিলেন। এই সম্মাননাপ্রাপ্তি আমাদের খুবই উৎসাহিত করেছে। নারীকে সব ক্ষেত্রেই নানা রকম প্রতিকূলতা নিয়ে কাজ করতে হয়। আমরা মূলত একটা মাধ্যমের লড়াইয়ের চিত্রটা দেখাতে পেরেছি।’
:: শাহনাজ জাহান

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়