ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

আশ্বাসে বন্দি কারাবন্দিদের করোনা টিকা দেয়ার প্রস্তাব

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইমরান রহমান : দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তার শুরু হওয়ার পর থেকেই কারাগারগুলোকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কারণ প্রত্যেক কারাগারেই ধারণক্ষমতার বেশি বন্দি থাকায় যে কোনো সময় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। এই প্রেক্ষাপটে দেশের ৬৮টি কারাগারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের পাশাপাশি আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেয় কারা অধিদপ্তর। পাশাপাশি ঝুঁকি বিবেচনায় কারাবন্দিদের করোনার টিকা দেয়ার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রস্তাব পাঠানোর ৬ মাসেও কারাবন্দিদের করোনার টিকা দেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারা অধিদপ্তর থেকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও প্রতিবারই মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে, দ্রুতই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে কারা অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেয়ার পরও থেমে নেই সংক্রমণ। এখন পর্যন্ত কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দিসহ ৮১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আর বাকি ১৭৪ জন কয়েদি-হাজতি। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন, যার ৭ জনই হাজতি বা কয়েদি। এদের মধ্যে গত ১৫ আগস্ট কারাগারের কনডেম সেলে মারা যান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্যতম আসামি এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম। তখন কারাগারে করোনার ঝুঁকির বিষয়টি আবারো নতুন করে আলোচনায় আসে। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, হাজতিরা নিয়মিত কারাগার থেকে আদালতে আসা-যাওয়া করায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। ফলে কয়েদিদের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করা জরুরি।
কারা সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে জাতীয়ভাবে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর কারাবন্দিদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অধিদপ্তর থেকে বন্দিদের টিকা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। সারাদেশের বিভিন্ন কারাগারে থাকা ১৭ হাজার কারাবন্দিকে টিকার আওতায় আনার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু এখনো মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কারা অধিদপ্তর বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তাগাদা দিলেও বারবার শুধু আশ্বাসই দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, কারাগারে যাতে করোনার সংক্রমণ না হয়, সেজন্য কারা অধিদপ্তরের নির্দেশে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কারো করোনা উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে আলাদা জায়গায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে যারা হাজতি, তারা কারাগারে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকায় একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। এজন্য অন্তত কয়েদিদের করোনার টিকা নিশ্চিত করলে ভালো হয়।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন ভোরের কাগজকে বলেন, অধিদপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কয়েদিদের করোনার টিকা দেয়ার প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। এটি যাতে দ্রুত করা হয়, সেজন্য আমরা অনুরোধ করে যাচ্ছি। আশা করি খুব দ্রুতই পেয়ে যাব।
তিনি আরো বলেন, করোনার বিস্তার রোধে আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি। অনেক কয়েদিকে সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের উদ্যোগে টিকা দেয়া হয়েছে। তবে আমরা মনে করি, দেশের নাগরিক হিসেবে কারাবন্দি সবার টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এজন্য প্রস্তাবটা করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয় যদি বিষয়টির অনুমোদন দেয়, তাহলে টিকার কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়