ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

প্রতারণার অভিযোগ : খুনি মোশতাকের ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. ফিরোজ মিয়া, কুমিল্লা থেকে : বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার কুমিল্লার আদালতে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ইশতিয়াতের বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পলাতক থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, জাল জালিয়াতি করে পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি বিক্রিসহ নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লার ৩নং আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মাহবুব খান ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ সময় আদালত ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করতে দাউদকান্দি থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। এলাকাবাসী জানান, খুনি মোশতাকের বাবা খন্দকার কবির উদ্দিন আহামেদসহ পূর্ব পুরুষরা ছিলেন আলেম ও হাক্কানি পীর। খন্দকার কবির উদ্দিনের পাঁচ ছেলে এবং পাঁচ মেয়ে। মৃত্যুকালে কবির উদ্দিন বিশাল সম্পত্তি রেখে গেছেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কবির উদ্দিনের কিছু সম্পত্তি কল্যাণমূলক কাজের জন্য ট্রাস্টের নামে লিখে দেয়া হয়। এছাড়া ওয়ারিশান সূত্রে বংশের সব সদস্য বাকি সম্পত্তির মালিক হলেও কবির উদ্দিনের সপ্তম সন্তান খুনি মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহম্মেদ বাবু বংশের সব সদস্যের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। শুধু তাই নয়, খন্দকার কবির উদ্দিনের নামে ট্রাস্টের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হয়ে বাবু ওই স্টেটের কার্যালয়ে নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানদের ছবি টাঙিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কবির উদ্দিনের অন্য সব ওয়ারিশকে ওই সম্পত্তি এবং বাড়িসহ মাজারে প্রবেশ করতে দেয় না বাবু। ট্রাস্ট এবং দাদার সম্পত্তি দখলে রাখতে মোশতাকপুত্র এলাকায় একটি বাহিনী গঠন করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কানাডায় বসে ওই বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি।
এরই মাঝে বেশ কিছু সম্পত্তি জাল দলিল এবং ভুয়া স্বাক্ষরে বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্পতির ন্যায্য হিস্যা এবং স্টেটের উত্তরাধিকারীর অংশিদারত্ব পেতে কবির উদ্দিনের ওয়ারিশ খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার গত বছরের শেষের দিকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে মোশতাকপুত্র ইশতিয়াক, নাতি ইফতেখার আহমেদ শাদসহ অভিযুক্ত কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিনকে আসামি করা হয়। এজন্য মোশতাকপুত্রের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার বাদী খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার অভিযোগ করে বলেন, খুনি মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আমাদের ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি কানাডায় বসে দশপাড়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন। আমাদের ওয়ারিশদের স্বাক্ষর জাল করে বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। এছাড়া আরো কিছু সম্পত্তি বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। তার নির্দেশে এসব জালিয়াতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মোশতাকের বাড়ির কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন।
তিনি বলেন, কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিনই মোশতাকপুত্রের সব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে থাকেন। কানাডায় বসে ওই কেয়ারটেকারের মাধ্যমেই বাহিনী নিয়ন্ত্রণসহ এলাকার আধিপত্য ধরে রেখেছেন মোশতাকপুত্র ইশতিয়াক।
কাজী রেহা কবির বলেন, খুনি মোশতাক আমার নানার পরিবারের সদস্য হলেও আমরা তাকে প্রাণভরে ঘৃণা করি। সর্বশেষ গত বছর মাকে নিয়ে হযরত খন্দকার কবির উদ্দিনের মাজার শরিফ জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে মোশতাকপুত্রের কেয়ারটেকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমাকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি। ওয়ারিশান সূত্রে আমরা এই স্টেটের উত্তরাধিকারী হলেও আমাদের সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। গায়ের জোরে মোশতাকপুত্র স্টেটের চেয়ারম্যান বনে গিয়ে নিজের এবং স্ত্রী সন্তানদের ছবি টাঙিয়ে রেখেছেন। এখন যেহেতু তার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে অবিলম্বে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি করেন রেহা কবির।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা যতটুকু জানি মামলায় অভিযুক্ত আসামি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু বিদেশে পালাতক আছেন। তারপরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়