অভিনন্দন জানাল প্রজ্ঞা : রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের অযোগ্য তামাক কোম্পানি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি গায়েব, তদারকি নেই : গণপরিবহন, দোকান, কাঁচাবাজার, বিনোদন কেন্দ্রে চলাচল স্বাভাবিক

পরের সংবাদ

আফগানিস্তানে যাওয়া বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজিজুর রহমান জিদনী : আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের ঘটনায় বাংলাদেশে দুর্বল জঙ্গি নেটওয়ার্ক আবারো শক্তিশালী হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় তালেবানের সমর্থনে বেশ কয়েকজন ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, যা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, যারা এ কথা বলছেন বা সন্দেহ করছেন সে বিষয়টি সঠিক নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা শীর্ষ ব্যক্তিদের কাছ থেকে এমন সময়ে আসা ভিন্ন বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, তথ্যের ভাণ্ডার থেকেই কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। কথার পেছনে তাদের মতো যুক্তি ও তথ্য রয়েছে। তবে মন্তব্য এমন হওয়া উচিত নয় যাতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, জঙ্গিবাদের পুনরুত্থান মতাদর্শে বিশ্বাসীরা এ ঘটনার মধ্য দিয়ে পুনরায় সংঘটিত হওয়ার চেষ্টায় রয়েছে। যদিও তাদের সামর্থ্য আগের মতো নেই। তবে এরপরও কয়েকজন চেষ্টা করেছেন সেখানে যাওয়ার এমন খবর রয়েছে। তাই এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে এখন ভাবা উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তথ্য-উপাত্ত ও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই কথা বলছেন। তবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এমন মন্তব্য হওয়া উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে আফগানিস্তান যখন সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলে ছিল তখন বাংলাদেশ থেকে অনেকে তাদের পক্ষে সেখানে যুদ্ধে গিয়েছিল। দেশে ফেরার পর তাদের মধ্যে মুফতি আব্দুল হান্নান ও আব্দুর রহমানের মতো অনেকে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছিল। তাদের নেতৃত্বে জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদ নামের দুটি জঙ্গি সংগঠনে ১৪ জন আফগান ফেরত ছিলেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইমলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সারা পৃথিবী এখন সাইবার ওয়ার্ল্ডে বন্দি। জঙ্গিরাও একই মিডিয়ায় তাদের রিক্রুট ও উদ্বুদ্ধ কাজে সক্রিয়। সম্প্রতি জঙ্গি সংগঠন তালেবান আফগানিস্তানে যুদ্ধে যেতে আহ্বান জানায়। আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু মানুষ হিজরতে ঘর ছেড়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছে আর কিছু পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা সন্ত্রাসবাদীদের বিষয়ে তৎপর রয়েছে। জঙ্গিরা থেমে নেই এটা বলা যায়। আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে। এছাড়া তিনি আরো বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে কোনো অভিযোগ এলেই জঙ্গি দমনে কাজ করে ডিএমপির বিশেষায়িত ইউনিট সিটিটিসিকে জানাতে হবে। জানা গেছে, গত ১০ মে চার তরুণকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিট। যাদের বয়স বয়স ২০-২৯ বছর। গ্রেপ্তারের পর জানা যায় তারা আফগানিস্তানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাদের কাছ থেকে পুলিশ তাদের দুই সঙ্গীর আফগানিস্তানে পৌঁছানোর খবর জানতে পেরেছে। সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, কয়েকজন যুবক আফগানিস্তানে হিজরতে গিয়েছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এর মধ্যেই সম্প্রতি গত মঙ্গলবার এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তালেবানের দখলে থাকা আফগানিস্তানে বাংলাদেশিদের যাওয়ার বিষয়টি অমূলক, এটা বাস্তবসম্মত নয় বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, আফগানিস্তান বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে, আর সে দেশের সঙ্গে বিমান চলাচলসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সুতরাং সেখানে বাংলাদেশ থেকে কারো যাওয়ার সুযোগ নেই। এগুলো অমূলক, এটা আমার মনে হয় যারা বলছেন, যারা সন্দেহ করছেন তাদের সন্দেহটা সঠিক নয়। যারা বলছেন তারা হয়তো চিন্তা না করেই বাস্তবতার কথা না ভেবেই বলেছেন।
এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সাইন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক বলেন, আফগানিস্তান থেকেই জঙ্গি তৎপরতা বাংলাদেশে এসেছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় জনমনে এমন কথার সুযোগ নেই। যাওয়া কঠিন হলেও আমরা আগে দেখেছি অনেকেই বিভিন্ন সীমান্ত অতিক্রম করে গেছেন। তাই এখন আমাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সঠিক নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়