মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

সিলেট বিএনপিতে ভাঙনের সুর : অভিসম্পাত দিয়ে পদত্যাগ শামসুজ্জামান জামানের

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও তার মতামত ও পরামর্শ উপেক্ষা করে সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করায় দল থেকে পদত্যাগ করেছেন এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান।
গত বুধবার রাতে সিলেট নগরীর একটি হোটেলে প্রেস ব্রিফিং করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান জামান। এ সময় লিখিত বক্তব্যে জামান বলেন, আমার সহযোদ্ধাদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ আপনারা প্রদর্শন করলেন অবশ্যই প্রকৃতি এর প্রতিবিধান করবে বলে আমার বিশ্বাস।
বুধবার রাতে সিলেট নগরীর মিরাবাজারের একটি অফিসে এ প্রেস ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ও ঋণবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন লস্কর, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, মওদুদুল হক, আব্দুর রকিব তুহিন, প্রভাষক রায়হান উদ্দিন, ফয়েজ আহমদ দৌলত প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে জামান বলেন, আপনারা প্রায়ই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন, রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়-ইনসাফের দাবি তোলেন কিন্তু নিজের অন্তর-আত্মাকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখবেন কি- আপনারা আপনাদের নিজেদের কর্মীদের প্রতি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন কিনা?
তিনি বিএনপিতে নেতৃত্ব পেতে হলে যোগ্যতার মাপকাঠি কি জানতে চেয়ে বলেন, যারা দেশ ও দলকে ভালোবাসে, জীবনবাজি রাখে, দুর্দিনে যারা বিশ্বস্ত থাকে, বন্দুকের-বেয়নেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় তাদের পাওয়া উচিত, নাকি যারা লবিং-তদবির অথবা বিশেষ ব্যবস্থায় সবকিছু হাসিল করে তাদের পাওয়া উচিত? নিজের পদত্যাগপত্রে নিজের জীবনের ৩৬ বছরের রাজনীতিকে ‘সাদকা’ হিসেবে দান করে দিলাম’ বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এ নেতা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জামানের এমন সিদ্ধান্তকে আমি ব্যক্তিগতভাবে সম্মান করি এবং আমি মনে করি দলের এখন যে সময় যাচ্ছে এখনই সঠিক সময় এমন প্রতিবাদের। তিনি বলেন, জামান কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক। তার নিজ জেলা-মহানগরের কমিটিতে তার মতামত নেয়াটা অবশ্যই প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তাকে পাশ কাটানো রীতিমতো অপমান। তিনি আরো বলেন, দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগরের যুগ্ম সম্পাদকের মতো কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে এই কমিটিতে। এরপর কেউ দলে থাকবে কেন?
এদিকে বিএনপি থেকে জামানের পদত্যাগের খবরে ইতোমধ্যেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সিলেট বিএনপিতে। জামানের অনুসারীরা ইতোমধ্যেই ঘোষিত কমিটি বয়কটের ডাক দিয়েছেন। গুঞ্জন উঠেছে পদত্যাগের তালিকা আরো দীর্ঘ হতে পারে।
সম্প্রতি সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে। যাতে কামরুল হাসান শাহীন, জিয়াউল গণি আরেফিন, এমরান আহমদ চৌধুরী, ফয়সল আহমদের মতো অন্তত ডজনখানেক সাবেক ছাত্রনেতা রয়েছেন পদপ্রত্যাশী। সিলেট বিএনপির বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, তৃণমূলের মতামতের প্রতি প্রাধান্য না দিলে সিলেট বিএনপি থেকেও পদত্যাগ করতে পারেন সাবেক অনেক ছাত্র নেতা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল হাসান শাহীন ভোরের কাগজকে বলেন, আমি প্রায় ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ছাত্রজীবন থেকেই জাতীয়তাবাদের আদর্শে রাজনীতি করে আসছি। দলের দুঃসময়েও মামলা-হামলা উপেক্ষা করে কর্মীদের আগলে রেখেছি। স্বাভাবিকভাবেই দলের কাছে প্রত্যাশা থাকে অন্তত তৃণমূল কর্মীদের মতামতকে মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু জেলা বিএনপির গত আহ্বায়ক কমিটি থেকে আমার নাম বাদ দেয়া হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বিগত কয়েকটি কমিটিতে তৃণমূলের মতামতের কোনো প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা জাতীয়তাবাদের আদর্শে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি এবং আগামীতেও থাকব। এজন্য দলের এই দুঃসময়ে জামানের এই সিদ্ধান্ত আমি সঠিক মনে করছি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়