সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মানববন্ধন

আগের সংবাদ

ঝুঁকিতে উদারপন্থি ও নারীরা : শরিয়া আইনে দেশ চালানোর ঘোষণা তালেবান প্রশাসনের, তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ বিভিন্ন শহরে

পরের সংবাদ

স্কুলের পাশে ময়লার ভাগাড় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক রাস্তার পাশ ঘেঁষে আছে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নাকে হাত দিয়ে বা কাপড় অথবা মাস্ক ব্যবহার করে চলছে পথচারীরা। এটি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষা রাস্তার প্রতিদিনের চিত্র।
সেখানে দীর্ঘদিন থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে রৌমারী হাটবাজার কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন হাজারো পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের উৎকট দুর্গন্ধ সহ্য করেই ওই রাস্তা দিয়ে পার হতে হচ্ছে। ময়লায় স্তূপে দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে সেখানে যেমন মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে তেমনি দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। রৌমারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ঘেঁষে বাজারে যান প্রতিদিন হাজারো মানুষ। বিশেষ করে কলেজপাড়া, বন্দবেড়, বাঘমারা, কুটিরচর, ফলুয়ারচর, চরবন্দবেড় গ্রামসহ দূর-দূরাস্ত থেকে হাটে আসা জনতা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রৌমারী বাজারে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা ঘেঁষে দিনের পর দিন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা সরাতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই রাস্তার এক পাশ ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। দিন যত যাচ্ছে রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ততই বাড়ছে। ওই সব ময়লা-আবর্জনার অধিকাংশই পচনশীল পদার্থ। রৌমারী হাট ও কাচা বাজারের নষ্ট হওয়া শাকসবজি, হোটেলের বাসি-পচা খাবার, মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনাও সেখানে ফেলা হচ্ছে।
ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট গন্ধের কারণে ওই রাস্তার পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। কাপড় দিয়ে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। এরপরও সেখানে প্রতিদিন ময়লা ফেলা অব্যাহত থাকায় পথচারীদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অন্যদিকে পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও ময়লার ভাগাড়ে পলিথিন আর ব্যবহার করা ওয়ান টাইম কাপের সয়লাব। পচনশীল পদার্থ পচে মাটির সঙ্গে মিশে গেলেও পলিথিন আর ওয়ান টাইম প্লেট থেকে যাচ্ছে অক্ষত। সেগুলো বৃষ্টির পানিতে ভেসে আশপাশের ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে উপজেলার কাঁচারির খালে গিয়ে খালের পানি দূষিত হচ্ছে। ওই রাস্তায় হাটও বসানো হয়। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে বিদ্যালয়ের ওই কক্ষগুলোতে বসে ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে না।
সেখানে স্থায়ী বসবাসকারী খোকা মিয়া বলেন, বাজারে যাওয়ার ওই রাস্তায় ঘেঁষে এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। কারো পক্ষে নিঃশ্বাস নিয়ে এই রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়।
কেরামত মিয়া নামের এক ভ্যানচালক বলেন, এই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইলে যাত্রী গাড়িতে উঠতে চায় না। উৎকট দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। সঙ্গে বমিও চলে আসে। এ রকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। আমাদের চলাচলের অনেক কষ্ট হচ্ছে।
রৌমারী সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা জানান, স্কুলের পাশে বাজারের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্কুল খুলে দিলে বিদ্যালয়ের ওই পাশের রুমগুলোতে বসে ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে না। আমি অতি তাড়াতাড়ি সেখানে থাকা ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করছি।
রৌমারী হাট ইজারাদার সোহেব আহমেদ সোহাগ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তাছাড়া রৌমারী বাজারের নির্দিষ্ট ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গাও নেই। তবে বণিক সমিতি ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে। স্কুলের পাশে ওই রাস্তা ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে এজন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়