চট্টগ্রাম অফিস : নগরীতে নিয়ম ভেঙে বাসায় বসে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন গ্রহণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মো. রেজা তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। টিকাকেন্দ্রে লাইনের পর লাইনে দঁাঁড়িয়ে টিকার জন্য মানুষ যখন হাহাকার, ঠিক তখনই মাত্র ১ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘরে বসে টিকা নেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার আট দিনের মাথায় তাদের জামিন হয়েছে। দুই আসামি হলেন- নগরীর জাকির হোসেন সড়কের বাসিন্দা মো. হাসান (৩৫) ও তার বন্ধু মোবারক আলী (৩৩)। এদের মধ্যে হাসান ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন এবং মোবারক তাকে সহযোগিতা করেন।
আসামিদের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, যে তিনটি ধারায় মামলা হয়েছে, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা এবং চুরির অভিযোগ- এসবের একটিও তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য নয়। তারা সরল বিশ্বাসে বাসায় বসে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রে না গিয়ে তারা যদি অপরাধ করেন, তাহলে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীও তো সমান অপরাধী। তিনিও তো কেন্দ্রে না ঢুকে গাড়িতে বসে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এসব বিষয় জামিন শুনানিতে আমি আদালতের কাছে পেশ করেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে দুজনকেই জামিন দিয়েছেন।
গণটিকা প্রদান কর্মসূচি চলাকালে গত ৭ আগস্ট নগরীর খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডে একটি বাসায় বসে বেআইনিভাবে ভ্যাকসিন নেয়ার ঘটনা ঘটে। পরদিন ভ্যাকসিন গ্রহীতা একজন নিজেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ করেন। এরপর পুলিশ অভিযানে নেমে গ্রেপ্তার করে দুজনকে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তপন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে ‘সরকারি ভ্যাকসিন আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগে’ চারজনকে আসামি করে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ভ্যাকসিন গ্রহীতা হাসান ও সাজ্জাদ, তাদের সহায়তাকারী মোবারক এবং চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ল্যাব টেকনিশিয়ান যীশু দত্তকে (৩৫) আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, হাসান ও মোবারক আলী পরস্পরের বন্ধু। মোবারক আলী তার পূর্বপরিচিত যীশুকে বাসায় নিয়ে অবৈধভাবে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ঠিক করেন। প্রতি ডোজ এক হাজার টাকার বিনিময়ে যীশু নগরীর জাকির হোসেন রোডে মোবারক আলীর বাসায় গিয়ে হাসান ও সাজ্জাদকে ভ্যাকসিন দেন।
এরপর অভিযুক্ত যীশু দত্তকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় চসিক। তিনি গণভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় চসিকের অস্থায়ী ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্র নগরীর উত্তর কাট্টলী মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ‘কোভিড ভ্যাকসিন’ প্রদান কার্যক্রমে দায়িত্বরত ছিলেন। তবে পুলিশ এখনো যীশুকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এছাড়া ওই মামলায় হাসান ও মোবারককে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।