একাই কোকোর কবর জিয়ারত করলেন রিজভী

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিবেশ তৈরি করে পাকিস্তান ও আমেরিকা

পরের সংবাদ

রূপগঞ্জে সরকারি সম্পত্তি জোর করে দখল : মামলার হুমকিবাধা দেয়ায়

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রভাবশালীর গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে প্রায় ৫ বিঘা সরকারি সম্পত্তি বালু ভরাট ও টিনের বেষ্টনী দিয়ে জবরদখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলে বাধা দেয়ায় ওই প্রভাবশালী গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে প্রতিবাদী এলাকাবাসীকে মামলা-হামলার হুমকিও দিয়েছে। প্রকাশ্যে সরকারি সম্পত্তি দখল করে নেয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন সরেজমিন ঘটনার সত্যতা পেয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে। উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাব এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীর এলাকায় সরকারি সম্পত্তি দখলের এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ইন্দিরা রোড এলাকার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে ব্যবসায়ী হোসেন মাহমুদ বেশ কয়েক বছর ধরে মিঠাবো মৌজার হাটাব শীতলক্ষ্যা তীরে খণ্ড খণ্ড করে জমি কিনে আসছেন। এলাকায় তার নিজস্ব গুণ্ডা বাহিনী রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম- আরিফ, রতন ওরফে রাহুল, আতাবর, মনজুর, নজরুল, নিশাদ, রোবেল, রবিউল, মমিন ও খোকন। এদের দিয়েই মাহমুদ জমিজমা দখল করান। এছাড়া জমি নিয়ে ঝামেলা হলে সমাধান করে তার বাহিনীর সদস্যরা। প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হোসেন মাহমুদের খণ্ড খণ্ড কেনা জমির পাশাপাশি মিঠাবো মৌজায় আরএস ৫ ও ৬ দাগের সরকারি প্রায় ৫ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি ৮২ শতাংশ ও বাকি জমি শীতলক্ষ্য নদীর। এসব সরকারি সম্পত্তিতে স্থানীয় এলাকাবাসী সবজি, আখসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ফসল ফলাতেন। গত এক সপ্তাহ ধরে হোসেন মাহমুদ তার গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে সরকারি সম্পত্তি বালু দিয়ে ভরাট শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী সরকারি সম্পত্তি দখলে বাধা দেন। এতে যারা বাধা দেন, তাদের বিভিন্ন মামলা-হামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি দেয়া হয়। ভয়ে প্রতিবাদকারীরা থেমে যান। এ সুযোগে হোসেন মাহমুদ তার বাহিনীদের দিয়ে টিনের বেড়ার বেষ্টনী স্থাপন করে জবরদখল করে ফেলে। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহানের কাছে অভিযোগ দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার ইউএনও নুসরাত জাহান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলামসহ উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি সম্পত্তি দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে উপজেলা প্রশাসের পক্ষ থেকে আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে ভরাট করা বালু এবং টিনের বেড়া বেষ্টনী সরিয়ে সম্পত্তি দখলমুক্ত করে দেয়ার নোটিস দেয়া হয়। এতে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে পার্শ্ববর্তী আতলাশপুর এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে আলী নেওয়াজের বিরুদ্ধেও সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে। তাকেও সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত করে দেয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও নোটিসে বলা হয়েছে। এলাকাবাসী দাবি জানান, উপজেলায় শত শত ভূমিহীন নিরীহ ও গরিব মানুষ রয়েছেন। প্রভাবশালী হোসেন মাহমুদের দখলে থাকা সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করে ওই সম্পত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প করে ভূমিহীনদের জন্য ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে হোসেন মাহমুদের মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ইতোমধ্যে সরকারি সম্পত্তিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ২৫ আগস্টের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে নোটিসের মাধ্যমে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দখলমুক্ত না করলে উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান করে দখলমুক্ত করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়