খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

দুই সুসংবাদ পেলেন সাকিব

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ক্রিকেট মাঠে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের দাপট নতুন কিছু নয়। তার ব্যাটিং-বোলিং দেখে মুগ্ধ হয়নি এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই সার্বিক দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করার সুবাদে একই সঙ্গে ২টি সুসংবাদ পেয়েছেন। তার মধ্যে একটি হলো আইসিসির জুলাই মাসের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার- জিতেছেন সাকিব। আর দ্বিতীয় সুসংবাদ হলো- টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ফিরেছেন তিনি। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পক্ষ থেকে ২টি ভিন্ন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তাই জুলাই মাসের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আইসিসিকে বলেছেন, গত কয়েক মাসে অসাধারণ কিছু পারফরম্যান্স হয়েছে, যে কারণে এই অর্জন আমার কাছে বিশেষ কিছু। সব সময়ই দলের জয়ে অবদান রাখতে পারাটা দারুণ ব্যাপার। সেটি করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। গত কয়েক সপ্তাহ দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমি ভীষণ খুশি।
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে নাস্তানাবুদ করতে বড় অবদান রাখেন সাকিব। বোলিংয়ে ছিলেন দুর্দান্ত আর ব্যাটিংয়ে ছোট ছোট কার্যকরি কিছু ইনিংস খেলেছেন। অজিদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ১১৪ রান ও বল হাতে ৭ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন তিনি। আর তাতেই শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শুরু করার আগে সাকিবের রেটিং পয়েন্ট ছিল ২৫২। ৫ ম্যাচে ব্যাট-বলে দারুন পারফরম্যান্স করে অর্জন করেছেন ৩৪ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে ২৮৬ পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। এখন দ্বিতীয় স্থানে থাকা নবীর পয়েন্ট ২৮৫। তবে সাকিব দীর্ঘদিন পর টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ তিনি এক নম্বর ছিলেন সেই ২০১৭ সালের অক্টোবরে।
তাছাড়া শুধু অলরাউন্ডারই নয়, বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়েও উন্নতি হয়েছে সাকিবের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেট নিয়ে সাত ধাপ এগিয়ে সাকিবের অবস্থান এখন ১২ নম্বরে। এখানে শীর্ষে আছেন প্রোটিয়া বোলার তাবরাইজ শামসি। তবে যাই হোক দুঃসময় কাটিয়ে সাকিব ঠিকই রাজার বেশে ফিরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে এই সংস্করণে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ উইকেট ও ১০০০ রান করার রেকর্ড গড়েন সাকিব। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তুলে সিরিজ সেরা হন সাকিব।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বল হাতে ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন মোস্তাফিজ। ৫ ম্যাচে ৩.৫২ ইকোনমিতে ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১৭ ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন মাত্র ৬০ রান। এর মধ্যে ৫৮ বলই ছিল ডট। ফলে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ভালো করার পুরস্কারও পেলেন র‌্যাঙ্কিংয়ে। ২০ ধাপ উন্নতি করে টাইগার দলের এ বাঁ-হাতি পেসারের অবস্থান এখন দশ নম্বরে।
তাছাড়া অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে বড় লাফ দিয়েছেন সাইফউদ্দিনও। ঘরের মাঠে অজিদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিই খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ওই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করে তিন উইকেট শিকার করে ৬৯ থেকে ৪৩তম স্থানে উঠে গেছেন সাউফউদ্দিন। ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে ২৯তম স্থান নিয়ে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার উপরে আছে নাঈম শেখ। মাহমুদউল্লাহর অবস্থান ৩৩ নম্বরে। ব্যাটিংয়ে শীর্ষে আছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান।
এছাড়া পুরুষদের ক্যাটাগরিতে চলতি বছরের জুলাই মাসে আইসিসির সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব। মুশফিকুর রহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সাকিব এই খেতাব জেতার সৌভাগ্য অর্জন করলেন। অন্যদিকে মেয়েদের বিভাগে জুলাইয়ের সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টেফানি টেলর।
গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন সাকিব। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্টে নেন ৫ উইকেট, যদিও ব্যাট হাতে এক ইনিংসে ৩ রানের বেশি করতে পারেননি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বল হাতে ৮ উইকেটের পাশাপাশি ১৪৫ রান এসেছে সাকিবের ব্যাট থেকে। যার মধ্যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসও খেলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩৭ রানের পাশাপাশি নিয়েছেন ৩টি উইকেট। এমন পারফরম্যান্সের কারণেই জুলাই মাসের সেরাদের তালিকায় মনোনয়ন পান। এই মাস সেরা হবার দৌড়ে সাকিবের সঙ্গে আরো দুই ক্রিকেটার ছিলেন- অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। কিন্তু তাদের দুজনকে পেছনে ফেলে জুলাইয়ের মাস সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন সাকিব।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে এ বছরের শুরুতেই নতুন পুরস্কার চালু করছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি। তারা প্রতি মাসে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সেরা পুরুষ এবং সেরা নারী ক্রিকেটারকে পুরস্কার দেন। এই পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে প্রথম তিন মাসে জিতেছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। পুরুষ ক্রিকেটারদের মধ্যে জানুয়ারিতে ঋষভ পন্ত, ফেব্রুয়ারিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মার্চে ভুবনেশ্বর কুমার পুরস্কার জেতেন। এরপর এপ্রিলে এই পুরস্কার ওঠে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের হাতে। আর মে মাসে আইসিসির পুরস্কারটি উঠেছিল টাইগার দলের দাপুটে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের হাতে।
ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন, ভোটিং পদ্ধতিতে সেরা ক্রিকেটার নির্বাচন করে আইসিসি। এই ভোটে অংশ নিবেন আইসিসির ভোটিং একাডেমি এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্রিকেট সমর্থকরা। আইসিসির ভোটিং একাডেমি গঠিত হয় জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকারদের নিয়ে। নির্বাচনে ভোটিং একাডেমির ভোট বিবেচনা করা হবে শতকরা ৯০ ভাগ, আর বাকি ১০ ভাগ সমর্থকদের ভোট।
প্রতি মাসের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে তিনজন ক্রিকেটারের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করে থাকে আইসিসির অ্যাওয়ার্ড নমিনেশন কমিটি। সেখান থেকে ভোটিং পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হয় একজন মাস সেরা ক্রিকেটার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়