নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারি : এফএএস ফাইন্যান্সের ৩০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এনআরবি গেøাবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনার অংশ হিসেবে এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ৩০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ আগস্ট তাদের সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তলবকৃতদের মধ্যে ২৬ জন এফএএস ফাইন্যান্সের ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ৪ জন। গত রবিবার কমিশনের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষর করা পাঠানো নোটিসে তাদের তলব করা হয়। গতকাল সোমবার সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের পাঠানো নোটিসে আগামী ১৬ আগস্ট যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে তারা হলেন- এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক নিয়াজ আহমেদ ফারুকী, দিপক কুমার চক্রবর্তী, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এসভিপি ও করপোরেট ফিন্যান্স এন্ড রিকভারি এবং আইন বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল শাখার ব্যবস্থাপক তানভির আহমেদ কমল, এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর ইমাদুল হক, ভিপি মো. মনির হোসেন, সিনিয়র অফিসার মৌসুমী পাল, ম্যানেজার আহসান রাকিব, সাবেক সিনিয়র অফিসার তাসনিয়া তাহসিন রোজালিন, সাবেক ভিপি মো. মনিরুজ্জামান আকন্দ, সাবেক এসভিপি ও এসএমই ফিন্যান্সের প্রধান মো. আজিমুল হক এবং এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক এসইভিপি ও সিএডির প্রধান প্রাণ গৌরাঙ্গ দে।
১৭ আগস্ট যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন- এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক গাজী, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক এম. এ হাফিজ, মো. আবুল শাহজাহান, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মাহফুজা রহমান বেবী, সোমা ঘোষ, ডা. উদ্দাব মল্লিক, মো. আতারুল ইসলাম এবং অরুণ কুমার কুণ্ডু।
১৮ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক অঞ্জন কুমার ঘোষ ও প্রদীপ কুমার নন্দী, স্বতন্ত্র পরিচালক বীরেন্দ্র কুমার সোম, সত্য গোপাল পোদ্দার, মোস্তফা আমিনুর রশীদ, পরিচালক মোস্তফা, গ্রিনলাইন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিলন কুমার দাস, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজের গোপাল চন্দ্র গাঙ্গুলী এবং তামিম অ্যান্ড তালহা ব্রাদার্স লিমিটেডের মো. মুনিরুল ইসলাম।
আলোচিত পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের যোগসাজশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স থেকে লুটপাট হয় ২ হাজার কোটি টাকা। শুধু একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে ৩০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মর্টগেজ ছাড়াই ঋণ নিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এজন্য আরবি এন্টারপ্রাইজ, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজ, তামিম অ্যান্ড তালহা এন্টারপ্রাইজ, ক্রসরোড করপোরেশন, মেরিন ট্রাস্ট, নিউটেক, এমএসটি মেরিন, গ্রিনলাইন ডেভেলপমেন্ট, মেসার্স বর্ণসহ অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। যার রেকর্ডপত্র দুদকের অনুসন্ধান টিমের কাছে রয়েছে। এ অনিয়মের সঙ্গে পি কে হালদার, ওই সব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ প্রায় ৭৫ জনের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। মূলত এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখতেই এ তলব।
প্রসঙ্গত, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে আরো একটি টিম তার আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। ওই টিম এরই মধ্যে ১৫টি মামলা করেছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভুয়া নামে ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা এবং ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করে দুদক।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি বিভিন্ন কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। কোম্পানিগুলো হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন।
পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও তার সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক এবং সর্বশেষ পি কের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়