নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

জলাধারের অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে চাষিরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটে সোনালি আঁশ পাট চাষে আবারো ঐতিহ্য ফিরে পেতে শুরু করেছে। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে পাট চাষ। এবার জেলার কৃষকরা ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পেরে খুশি। অপরদিকে পাট পচানোর জলাধার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
জেলায় গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে এবার ১০০ একর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে। গত মৌসুমের তুলনায় পাটের দাম বেশি পাওয়ায় জয়পুরহাটে এবার বেশি পাট চাষ করেছেন কৃষকরা। মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় এখানকার কৃষকদের জমিতে উৎপাদিত দেশি জাতের পাট বেশ ভালো হয়েছে।
এদিকে পাট চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। পাট পচানোর মতো প্রয়োজনীয় পুকুর বা জলাধার পাচ্ছেন না তারা। পাশাপাশি পাটের আঁশ ছাড়ানোর আধুনিকীকরণ যন্ত্র রিবেন রেটিং পদ্ধতি এখনো চালু হয়নি এ জেলায়। কাজেই বেশি মূল্য পেলেও আগামীতে পাট চাষে অনেকটায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন জেলার পাটচাষিরা।
গত মৌসুমে পাটের বাজারমূল্য বেশ ভালো পাওয়ায় এই সোনালি আঁশ পাট চাষে বেশ আগ্রহ বেশি ছিল জয়পুরহাটের পাটচাষিদের। এবারে বাজারে বর্তমান নতুন সাদা পাটের মূল্য ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ আর তোষা পাটের মূল্য ২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। এখানকার কৃষকদের জমিতে তোষা ও দেশি জাতের পাটের চাষ বেশি হয়ে থাকে। জেলার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী আর বাতাসের আদ্রতা ভালো থাকায় এবার ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। পাট চাষ করে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সাফল্য লাভ করবে বলে জানিয়েছেন একাধিক পাট ব্যবসায়ী।
এদিকে কালের বিবর্তনে পাট পচানোর জলাধার আর খাস পুকুর, নদী-নালা, ডোবা সবখানেই এখন মৎস্য চাষের জন্য সংরক্ষিত। মাছ চাষের ফলে পাট পচানোর মতো প্রয়োজনীয় জলাধার পাচ্ছেন না এ জেলার কৃষকরা।
সদর উপজেলার বামনপুর, মাদারগঞ্জ, সগুনা গ্রামের পাটচাষি মোশাররফ হোসেন, পাঁচবিবির কুতুবুল আলম, আব্দুল ওহাব, জামালগঞ্জ এলাকার বাবু, রবিউল ইসলামসহ একাধিক পাটচাষি জানান, পাট চাষ করে তারা বেশি মূল্য পেলেও এখানে প্রয়োজনীয় জলাশয়ের অভাবে পাট জাগ (পচানো) দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন। এজন্য আগামীতে পাট চাষে আগ্রহ থাকলেও পাট পচানো সমস্যা থাকায় ব্যাপক হারে পাট চাষ করা অনিশ্চিত দেখা দিয়েছে।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স ম মেফতাহুল বারী জানান, এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমি। এর বিপরীতে পাট চাষ হয়েছে ৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমি, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এর মধ্যেই পাট কর্তন করা হয়েছে ২ হাজার ৬ হেক্টর জমি। পাট উৎপাদন হবে প্রায় ৮ হাজার টন। পাট পচানোর প্রয়োজনীয় জলাধার না থাকা, বৃষ্টি কম হওয়ায় এবং রিবেন রেটিং পদ্ধতি এখনো জেলায় চালু না হওয়ায় পাটচাষিরা সমস্যায় রয়েছেন। এজন্য পাট ছড়ানোর আধুনিকীকরণ পদ্ধতি প্রচলনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পাট চাষের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো পাট পচানোর জন্য অপর্যাপ্ত পুকুর বা জলাধার- এর সঙ্গে পাট বিক্রির জন্য আলাদা বাজার ব্যবস্থাপনা। এ দুটি সমস্যার সমাধান করা গেলে জেলায় আগামীতে পাট চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়