শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

সিলেটে অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতায় গণটিকা

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : সিলেটে সমন্বয়হীনতা আর অব্যবস্থাপনায় চলছে করোনা ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম। সিলেট মহানগরীর দুটি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ছাড়াও গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ৮১টি কেন্দ্রেও দীর্ঘ হচ্ছে টিকা প্রত্যাশীদের তালিকা।
নগরীর বেশ কয়েকটি টিকাকেন্দ্র গতকাল রবিবার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ কেন্দ্রেই মানুষের দীর্ঘ লাইন। যেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ ডোজ করে টিকা দেবার কথা থাকলেও টিকা প্রত্যাশীদের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। কেন্দ্র টিকা না পেয়ে ফিরে যাওয়া মানুষের সংখ্যাটাও বিশাল। কোথাও কোথাও আবার নির্ধারিত ডোজের কম টিকা প্রদান করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কার্যক্রম। এছাড়া ভোটার দেখে টিকা প্রদানের অভিযোগও রয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে।
সকাল ১০টায় নগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের হাতিম আলি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিতে যান সৈয়দা কামরুন নাহার। রেজিস্ট্রেশন করলেও এসএমএস আসেনি এই অজুহাতে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয় কেন্দ্র থেকে। কামরুন নাহার বলেন, আমি যখন লাইনে দাঁড়াই তখন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কিন্তু এসএমএস আসেনি, এমন অনেকেই ছিলেন লাইনে। কিন্তু তাদের টিকা দিলেও আমাকে দেয়া হয়নি।
একই রকম অভিযোগ নয়াসড়ক এলাকার তাসলিমা খাতুনের। ১৬ নং ওয়ার্ডের ভোটার না হওয়ায় নগরীর কিশোরীমোহন কেন্দ্র থেকে তাকে ফিরিয়ে দেন স্থানীয় কাউন্সিলরের কর্মীরা। তাসলিমা খাতুন ভোরের কাগজকে বলেন, আমি সকাল থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে যখন বুথ পর্যন্ত পৌঁছালাম তখন আমাকে বলা হলো আমি এ এলাকার ভোটার না, তাই টিকা দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও তা রিসিভ করেননি ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মুহিত জাভেদ। তবে এসব অভিযোগ অনাকাক্সিক্ষত বলে মন্তব্য করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল আলীম শাহ।
তিনি বলেন, টিকা সবার পাওয়ার কথা, ভোটার না হলে টিকা দেয়া হবে না, এমন কোনো কথা নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে এমন বিশৃঙ্খলা হচ্ছে বলে আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। তিনি বলেন, মেয়র মহোদয় ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে আলাপ করেছেন। আশা করছি, এটা সমাধান হবে।
এদিকে রেজিস্ট্রেশন করেও টিকার তারিখ না পাওয়া গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই। এতে অপেক্ষমাণ তালিকা দীর্ঘ হলেও সবাই টিকা পাবেন বলে আশ্বস্ত করছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইলাম। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ২৮ হাজার লোক মডার্নার টিকার প্রথম ডোজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। যা এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজারের উপরে। এর মধ্যে নগরীর দুটি স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে দৈনিক এক হাজারজনকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এজন্য অপেক্ষমাণ তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপাতত এদের সবাইকে প্রথম ডোজ টিকা প্রদানের সুবিধার্থে নতুন করে কাউকে এসএমএস দেয়া হচ্ছে না। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টিকা মজুত রয়েছে, কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। ধারাবাহিকভাবে সবাই টিকা পাবেন।
এদিকে অনেকে প্রথম ডোজ দেয়ার দুই মাস পরেও দ্বিতীয় ডোজ না পাবার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, দুই মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। প্রথম ডোজ নেবার অন্তত পাঁচ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিলেই এটি সমান কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, আগামী ১০ তারিখ থেকেই আমরা এস্ট্রেজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু করব। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকার মজুত রয়েছে। তাই অহেতুক গুজবে কান না দিয়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়