কাগজ প্রতিবেদক : দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ইন্টারনেট গ্রাহকরা। গত শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি নেমে আসে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকরা ইন্টারনেটের এ ধীরগতি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরে ফাইবার ক্যাবল ‘ব্রেক’ করায় সাবমেরিন ক্যাবলের (সিমিউই-৫) সংযোগ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে ইন্দোনেশিয়া অভিমুখের সাবমেরিন ক্যাবল লাইন কাটা পড়ার কারণে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে বন্ধ হয়ে গেছে কুয়াকাটায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন সিমিইউ-৫। ফলে সারাদেশেই কম-বেশি নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে সাবমেরিন ক্যাবল সিমিউই-৪ এর ব্যান্ডউইডথ সেবা চালু রয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসিও (বিএসসিপিএলসি) এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহমেদ জানিয়েছেন, গত শুক্রবার রাত ১২টার পর এই ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবেই বিষয়টি আমরা টের পেয়েছি। সিমিউই-৫ দিয়ে দেশে ১ হাজার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ হয়। এর পুরোটাই এখন বন্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করছি সিমিউই-৪ (প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল) দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করতে। সিঙ্গাপুরে ফাইবার ক্যাবল ব্রেক করায় বাংলাদেশের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়াসহ এই লাইনের সঙ্গে যেসব দেশ যুক্ত আছে, সবাই এই মুহূর্তে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন। এর ফলে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের ইন্টারনেটের যে কানেক্টিভিটি তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, কবে নাগাদ ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করতে একটু সময় লাগবে। সিঙ্গাপুরের ক্ষতিগ্রস্ত ফাইবার লাইন ঠিক করার ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে। এক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগে। এ ধরনের সমস্যা সমাধানের স্পেশাল ম্যানেজমেন্ট রয়েছে ও তাদের অত্যাধুনিক জাহাজ রয়েছে। তবে আমাদের কক্সবাজারের সাবমেরিন লাইনটি সম্পূর্ণ চালু আছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কক্সবাজারের সাবমেরিন ক্যাবল সিমিউই-৪ এর ব্যান্ডউইথের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে ঘাটতি পূরণ করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি, শিগগিরই ইন্টারনেটের ধীরগতির সমস্যাটি কেটে যাবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, গ্রাহকরা ফোন করে ইন্টারনেটে ধীরগতির অভিযোগ করছেন। আমরা তাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) সিমিউই-৪ এবং সিমিউই-৫ নামের দুটি আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবল কনসোর্টিয়ামের সদস্য। যেটি বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবলসের অধিক ক্ষমতা ও পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করে। বর্তমানে সিমিউই-৪ এবং সিমিউই-৫ ক্যাবল দুটির মাধ্যমে বাংলাদেশের ইন্টারনেট এবং আন্তর্জাতিক ভয়েস ট্র্যাফিক চলছে। সিমিউই-৪ এর জন্য ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন রয়েছে কক্সবাজারে। আর সিমিউই-৫ এর জন্য ল্যান্ডিং স্টেশনটি পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।