চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস আজ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির প্রাণস্পন্দনের প্রতীক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাঙালি মানসে নতুনতর প্রাণস্পন্দনের প্রতীক রবীন্দ্রনাথ। যিনি আলাদা এক ঔজ্জ্বল্যে অবস্থান নিয়ে বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ করছেন। বিশ্বজুড়ে আজ যখন কোভিড-১৯-এর মহামারি চলছে, তখনো প্রাসঙ্গিক তিনি। জীবদ্দশায় এ শিক্ষাগুরু প্লেগ, ম্যালেরিয়া প্রভৃতির বীভৎস রূপ দেখেছেন। প্লেগ সচেতনতায় রাস্তায়ও নেমেছিলেন। যুক্ত হয়েছিলেন হাসপাতাল নির্মাণকাজে। আর যা লিখেছিলেন, তা এখনো প্রাসঙ্গিক। তিনি লিখেছিলেন, ‘ম্যালেরিয়া-প্লেগ-দুর্ভিক্ষ কেবল উপলক্ষমাত্র, তাহারা বাহ্য লক্ষণমাত্র-মূল ব্যাধি দেশের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে।’ আজ শুক্রবার, ২২ শ্রাবণ কবিগুরুর ৮০তম প্রয়াণ দিবস। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে এবারও স্মরিত হবেন বাংলা সাহিত্যের এই আলোকবর্তিকা।
কবিগুরুর প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা। অজস্র রচনায় বাংলার বর্ষাকে তিনি অনিন্দ্যসৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে এই বর্ষা ঋতুতেই চিরবিদায় নেন বাঙালির প্রাণের মানুষটি। ৮০ বছর বয়সে চলে গেলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ মৃত্যু দেহান্তর মাত্র। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনেক কিছুরই প্রথম রূপকার তিনি। তার হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যে নতুন যুগের সৃষ্টি হয়। এক জীবনে তিনি সাহিত্যের এমন বিচিত্র এক জগৎ রচনা করেছেন, যা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্যের আসরে করেছে মহিমান্বিত। বিপুল তার রচনা, বিচিত্র তার বিষয়। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই ফলেছে রাশি রাশি সোনা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত, ভ্রমণকাহিনি, চিঠিপত্র, সমালোচনা, চিত্রকলা সমৃদ্ধ হয়েছে তার অজস্র অনন্য সৃষ্টিতে। ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তার নোবেলপ্রাপ্তি বাংলা সাহিত্যকে বিরল গৌরব এনে দেয়। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় নয়, সমাজ, রাষ্ট্র, শিক্ষা, অর্থনীতি নিয়ে স্বকীয় ভাবনাও তাকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।
গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন ও গণশিক্ষার যে অগ্রযাত্রা আমরা এখন লক্ষ করি, রবীন্দ্রনাথ সেই সময় নওগাঁর পতিসর ও কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পরবর্তীকালে শান্তিনিকেতনে সে ধরনের উদ্যোগ

গ্রহণ করেছিলেন। গরিব কৃষক প্রজার কল্যাণে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কৃষি সমবায় ব্যাংক। পরে নোবেল পুরস্কারের অর্থের একটি অংশও এই ব্যাংকে যোগ করেছিলেন। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে গিয়ে দেশজ আদর্শ লালিত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শান্তিনিকেতন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই অনন্য ব্যক্তিত্ব যার লেখা গান বাংলাদেশ ও ভারত- দুই দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে মনোনীত হয়েছে।
করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে ২২ শ্রাবণ উপলক্ষে এবার তেমন কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই। তবে বাঙালি মননের চিরনবীন এই সারথির প্রয়াণ দিবসে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। রবীন্দ্র স্মরণের এই উৎসবে আজ কোনো শিল্পীর কণ্ঠে উৎসারিত হবে হয়তো অমিয় সুরের ধারা, যেখানে ধ্বনিত হবে, ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু বিরহদহন লাগে/তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা…’।
রবীন্দ্রপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমির আয়োজনে আলাচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘পূর্ববঙ্গ থেকে বাংলাদেশ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ছায়ানটের আয়োজনে ‘শ্রাবণের আমন্ত্রণে’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠান এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে রয়েছে আলোচনা ও সংগীতানুষ্ঠান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়