চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

বজ্রপাতে ১৮ বরযাত্রীর মৃত্যু : এক পরিবারের সাতজনের দাফন বাড়ির আঙিনায়

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : ভাগ্নে মামুন ও ভাগ্নে বউ সুমিকে আনতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মামুনের শ্বশুরবাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেরোরশিয়া গ্রামের হোসেন আলীর বাড়ি যাচ্ছিলেন মাইদুল ইসলাম (৩৫)। যাত্রাকালে সবাই মিলে আনন্দ আর উচ্ছ¡াসে মেতেছিলেন। তবে সেই আনন্দ মুহূর্তেই শোকে পরিণত হয় বজ্রপাতের আঘাতে। গত বুধবার

এক বজ্রপাতেই মাইদুল হারান মা-বাবা, ভাই-ভাবি, বোনসহ পরিবারের সাত সদস্যকে। একই দিন বিকালে বাড়ির আঙিনায় স্বজনদের দাফন করেন অশ্রæসিক্ত নয়নে।
এর আগে দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর দক্ষিণ পাঁকা ঘাটে পৌঁছানোর পরপরই বৃষ্টি শুরু হলে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে ঘাটের ইজারাদারের ছোট কুঁড়েঘরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫ জন। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিকট শব্দে পতিত বজ্রপাতে মারা যান ১৮ জন। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত ১৮ জনের মধ্যে রয়েছেন- মাইদুল ইসলামের বাবা মো. তোবজুল (৭০), মা জমিলা বেগম (৬০), ভাই সাইদুল (৪০), ভাবি টকি বেগম (৩০), ভাতিজা বাবু (১৫), বোন লেতুন বেগম (৪৫) ও ভাগ্নে বাবলু (২২)।
এদিকে ওই বজ্রপাতে আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১২ জন। আহতরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর মামুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নামোসূর্য নারায়ণপুর গ্রামের পাতুর ছেলে।
ঘটনার রাতে মাইদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, কতজন মারা গেছে আমার জানা নাই। শুধু জানি আমি এতিম হয়ে গেছি, নিঃস্ব হয়ে গেছি। ওই সময় হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল বলে মেয়েকে নিয়ে ধীরে ধীরে নৌকা থেকে নামছিলাম। ছাউনিতে যাওয়ার আগেই বজ্রপাত হয়। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যাই। যখন জ্ঞান ফিরল তখন জানলাম আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আব্বা-আম্মা, ভাই-বোন, ভাইগনা-ভাতিজা, বোইন মরে গেছে। মাটিও দিলাম বাড়ির আঙিনায়!
এদিকে বজ্রপাতে নিহত সহবুলের ভাই রাকিব আলী বলেন, সোমবার সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাট গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে মামুনের সঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের তেরোরশিয়া গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে সুমি খাতুনের বিয়ে হয়। বুধবার বর ও কনেকে আনতে পদ্মা নদী পার হয়ে নৌকায় কনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন বরপক্ষের লোকজন। দুপুর ১২টার দিকে তারা পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা ঘাটে পৌঁছলে বৃষ্টির কারণে নৌকা থেকে নেমে ঘাটের পাশে ছাউনির নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন অনেকে। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই আমার ভাইসহ ১৮ জন মারা যান।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। ঘটনার পর এলাকা ঘুরে এসে তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়