চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

ডিজিটাল পৌরসভা নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি : আলহাজ আবু বক্কর সিদ্দিক মেয়র, নালিতাবাড়ী পৌরসভা

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : নালিতাবাড়ী পৌরসভাকে নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য ডিজিটাল পৌরসভায় রূপান্তর করতে নিরলসভাবে কাজ করছি। বললেন, পরপর দুবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবু বক্কর সিদ্দিক। ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ৯.২৫ বর্গ কিলোমিটারের এই পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। কৃষক, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীসহ প্রায় ২৯ হাজার মানুষের বসবাস এই পৌরসভায়। ভারত থেকে নেমে আসা দুরন্ত পাহাড়ি নদী ভোগাই শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে। এতে শহরের এক প্রান্তে নালিতাবাড়ী বাজার ও অন্য প্রান্তে তারাগঞ্জ বাজার। দুই পাড়ে ২টি বাজার নিয়ে ভোগাই নদী বিনিসুতার মতো মালা গেঁথে রেখেছে এ শহরকে। শহরের অদূরে রয়েছে নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা মালামাল ট্রাকে করে শহর হয়ে যাতায়াত করতে হয়। নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে নালিতাবাড়ী শহর হয়ে নকলা উপজেলা পর্যন্ত রয়েছে ২৯ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ২২ হাজার ৮৫ জন। পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৬১৩ ও নারী ভোটার ১১ হাজার ৪৭২ জন।
১৯৯৯ সালে পৌরসভায় প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন তৎতকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবদুল হালিম উকিল। তিনি দুইবার নির্বাচিত হওয়ার পর শহর বিএনপির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে বিএনপির মেয়রকে পরাজিত করে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি দলীয় প্রতীক

নৌকা নিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক বিপুল ভোটে বিএনপির প্রার্থী আনোয়ার হোসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হন।
আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ২০১৬ সালে মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি এলাকার সাংসদ, সাবেক সফল কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর দিক-নির্দেশনায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরের উত্তর বাজার এলাকায় পৌরসভার তিনতলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবন নির্মাণ করেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম স্থানে থাকা গরুর হাটটি সরিয়ে শহরের পাশে নয়ানিকান্দা এলাকায় ২ একর জমি দখলমুক্ত করে সেখানে গরুর হাট স্থানান্তর করেন, যা থেকে বছরে ২ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। শহরের আম বাগান এলাকায় ভোগাই নদী সংলগ্ন ২ একর জমি দখলমুক্ত করে সেখানে সার্জেন্ট আহাত স্মৃতি পার্ক নির্মাণ করেন। তারাগঞ্জ উত্তর বাজার এলাকায় নালিতাবাড়ী পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের জন্য নর্দমা সরিয়ে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রশস্ত দৃষ্টিনন্দন মেয়র ঝিল নামে নালা নির্মাণ করেন। যার দুই পাশে অসংখ্য দোকানপাট গড়ে উঠেছে। গড়কান্দা এলাকায় ৪০ শতক জমি দখলমুক্ত করে নালিতাবাড়ী ডায়াবেটিক হাসপাতাল নির্মাণে স্থান নির্ধারণ করেন। নালিতাবাড়ী বাজারে ৬২ শতক জমি দখলমুক্ত করে পৌরসভার আওতায় নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ও এডিপির অর্থায়নে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২৫ কিলোমিটার পাকা ও ৩২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক সংস্কার করেন। শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্যে ৯টি ওয়ার্ডে ১০ কিলোমিটার নালা সংস্কার করেছেন। এছাড়া বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, মাতৃকালীন ও পুষ্টি-ভাতা পেতে কোনো অতিরিক্ত অর্থ না নিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে মেয়র ৯টি ওয়ার্ডে গিয়ে নিজ হাতে কার্ড বিতরণ করে গরিব ও দুস্থ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত মানুষ হয়ে ওঠেন। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক দখলমুক্ত করে প্রশস্ত করা এবং শহরকে পলিথিনমুক্ত করতে নিজ হাতে বিভিন্ন স্থানে পলিথিন জ্বালিয়ে দিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছে প্রসংশিত হন। এছাড়া শহরের নালিতাবাড়ী বাজার, তারাগঞ্জ উত্তর বাজার ও গড়কান্দা এলাকায় যত্রতত্র রাস্তার ধারে সবজির বাজার সরিয়ে দিয়ে তিনি নিদিষ্ট স্থানে বাজার স্থাপন করেছেন। শহরে বিদ্যুতের জন্য বাঁশের খুঁটির পরিবর্তে পাকা খুঁটিসহ শহরকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনতে কাজ করছেন। শহরে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের জন্য ২টি পাম্পের মাধ্যমে ১ হাজার ৯৯০ জন গ্রাহককে পানি সেবা নিশ্চিত করেছেন। পৌরক্রীড়া সংস্থা গঠন করে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রতি বছর ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করে চলেছেন। তিনি প্রতি বছর শীতকালে গরিব-দুঃখীদের জন্য ‘মানবতার দেয়াল’ নামে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে গরিব মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। এছাড়া করোনা চলার সময়ে শ্রমজীবী মানুষের কাছে মুঠোফোনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান।
মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এলাকার সাংসদ সাবেক সফল কৃষিমন্ত্রী অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর দিক-নির্দেশনায় শহরকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করতে কাজ করছি। নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য শহরে পরিণত করতে পার্ক, বিনোদনের জন্য সাংস্কৃতি সংগঠনকে সহযোগিতা করা, মাদক থেকে কিশোরদের দূরে রাখতে প্রতি বছর বিভিন্ন ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেট ও ব্যাটমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। চলমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি পৌর পিতা নই। আমি পৌর শ্রমিক মাত্র। স্বচ্ছতার সঙ্গে মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য ডিজিটাল শহর রূপান্তরে আরো কাজ করতে চাই। ইতোমধ্যে ভোগাই নদীর পাশে সার্জেন্ট আহাদ স্মৃতি পার্ক করা হয়েছে। এখানে সার্জেন্ট আহাদের স্মরণে ছবিসহ একটি মনুমেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়