রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদ সানি (১৮) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রকাশ্য দিবালোকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সন্ত্রাসীরা আরো তিন যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। গত সোমবার রাতে উপজেলার গোলান্দাইল বেড়িবাঁধ এলাকায় ঘটে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। নিহত মোহাম্মদ সানি গোলাকান্দাইল বিজয়নগর এলাকার মিল্লাত হোসেনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া এলাকার মিছির আলীর ছেলে মাহাফুজ ফেসবুকে মোহাম্মদ সানিকে নিয়ে একটি মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়। এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এছাড়া আগে থেকেই মাহাফুজদের সঙ্গে মোহাম্মদ সানিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদ সানি ও তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোলাকান্দাইল বেড়িবাঁধ এলাকায় মাহাফুজকে খুঁজতে যায়। এ সময় মাহাফুজের সহযোগী দুইজনকে আটক করে মোহাম্মদ সানিসহ তার লোকজন। এরপর তারা ধারালো অস্ত্রের মহড়া দেয়। এ সময় মাহাফুজ ও তার ভাই মাসুমসহ তাদের লোকজনও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাল্টা মহড়া দেয়।
একপর্যায়ে মাহাফুজ ও তার ভাই মাসুমসহ তাদের লোকজন মোহাম্মদ সানিসহ তাদের লোকজনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে। একপর্যায়ে মাহাফুজ ও মাসুমসহ প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদ সানিকে প্রকাশ্য দিবালোকে রামদা, চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হীরা ও সায়েমসহ আরো তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রকাশ্য দিবালোকে কোপাকুপি দেখতে পেয়ে পথচারী থেকে শুরু করে স্থানীয় এলাকাবাসী ছুটাছুটি করতে শুরু করে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আলামিনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়ায় গোলাকান্দাইল এলাকায় লাখ লাখ মানুষের বসবাস। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়ায়। এখানে কয়েকদিন পরপর হত্যাসহ এ ধরনের মারামারি হানাহানির ঘটনা ঘটে আসছে। এ এলাকায় স্থানীয় ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ নজর না দেয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
রূপগঞ্জ থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কোনো অপরাধীর ছাড় নেই।