ডিএনসিসি মেয়র আতিক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন করতে পারছি না

আগের সংবাদ

বেহাল রেলের মেগা প্রকল্প : খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানে না

পরের সংবাদ

প্রথম লকডাউনকৃত উপজেলা শিবচর : সবচেয়ে কম সংক্রমণ সুস্থতার হারও বেশি

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি : দেশের প্রথম লকডাউনকৃত মাদারীপুরের শিবচরের হাইফো ন্যাজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন সমৃদ্ধ ২০ শয্যার বিশেষায়িত করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রটি এখন করোনা রোগীদের ভরসাস্থল। গত এক মাসে বিশেষায়িত এ কেন্দ্রে প্রায় অর্ধশত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯ করোনা রোগী। এছাড়া, শিবচর ডায়াবেটিক সমিতির ‘ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক’ হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জন্য নতুনমাত্রা যোগ করেছে।
একই সংস্থার টেলিমেডিসিন সেবায় যুক্ত রয়েছেন করোনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এদিকে, করোনা আক্রান্ত হলে আইসোলেশন কেন্দ্রে যাওয়া ও দলীয় নেতাকর্মীসহ শিবচরবাসীকে ৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া টিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।
সরজমিনে জানা যায়, গত বছর দেশে সর্বপ্রথম প্রবাসী অধ্যুষিত শিবচরকে লকডাউন করা হয়। এ পর্যন্ত শিবচরে ৫৩৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে সাড়ে ৩ শতাধিক রোগী সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে বিশেষায়িত আইসোলেশন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯ জন রোগী। জুলাই মাসে এ আইসোলেশন কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন অর্ধশত রোগী। হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শতাধিক রোগী। উপজেলায় টিকা নিয়েছেন ৯ হাজার ৬৯ জন। শিবচর হাসপাতালে এ পর্যন্ত এন্টিজেন টেস্ট করা হয়েছে প্রায় ২১০০, পিসিআর টেস্ট করা হয়েছে ১ হাজার ৬৫৪টি। আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলায় করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ঘরে ঘরে খাবার সহায়তা, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য শিবচরের দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের হাজী আবুল কাশেম উকিল মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে ২০ শয্যার বিশেষায়িত আইসোলেশন কেন্দ্র ঘোষণা করেন চিফ হুইপ। ব্যক্তিগত অর্থায়নে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন ও উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আইসোলেশন কেন্দ্রটিতে তিনটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলো থেরাপি সিস্টেম, সাতটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন (অক্সিজেন জেনারেটর), ১২টি পালস্ অক্সি মিটার, ইনফ্রাডার থার্মোমিটার, ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল স্কানার ৫টিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া ফ্রিজ, এসিসহ নানাবিধ সুবিধা দিয়ে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্টাফদের জন্য ডরমেটরি রয়েছে এখানে। ১৫ দিন পর পর স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবর্তন হয়ে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। করোনায় চিকিৎসার জন্য কয়েক দফায় লক্ষাধিক টাকার ওষুধ, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে, শিবচর ডায়াবেটিক সমিতির পক্ষ থেকে হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীদের জন্য ‘ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক’ কার্যক্রম ও টেলিমেডিসিন সেবা সাড়া ফেলেছে। এ পর্যন্ত ৬০ জন রোগীকে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে দেয়া হচ্ছে ফ্রি মাস্ক। সংস্থাটির টেলিমেডিসিন সেবায় যুক্ত রয়েছেন ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের করোনা স্পেশালিস্ট ডা. মাহমুদ হোসেন ও শিবচর হাসপাতালের ডা. রাকিবুল ইসলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, করোনা রোগীদের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন খুব জরুরি। চিফ হুইপের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে রূপান্তর, ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমের কারণে শিবচর দেশে প্রথম আক্রান্ত হয়েও এখন জেলার মধ্যে সবচেয়ে কম সংক্রমিত ও সুস্থতার হার বেশি।
চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে পর্যাপ্ত অক্সিজেনসহ করোনার চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক, টেলিমেডিসিন, খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ল²ণ দেখা দিলে টেস্ট করাতে হবে। রোগ গোপন না করে আইসোলেশন কেন্দ্রে যেতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীসহ শিবচরবাসীকে করোনার টিকা গ্রহণে জোড়ালো আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়