নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় ভুয়া ডিসি, পুলিশ সুপার, ডাক্তার ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন পেশার পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃতের নাম সাদ্দাম হোসেন। সে যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার আটুলিয়া গ্রামের কাওছার আলীর ছেলে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, সাদ্দাম হোসেন বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েকে পটানোর কৌশল হিসেবে নিজের লাইফ স্টাইল চেঞ্জ করে। অনলাইন ম্যারেজ মিডিয়াগুলোতে কখনো আমেরিকা সিটিজেন, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, ডিসি, পুলিশ সুপার, ডাক্তার সেনাবাহিনী ও বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে নিজেকে অবিবাহিত দেখিয়ে বিয়ের জন্য পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গে আলাপের শুরুতেই তাদের ছবি নেয়। তারপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিদেশ নেয়ার কথা বলে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকার পাশাপাশি মেয়েদের কাছ থেকে ব্যাংক চেকও নিয়ে রাখে সে। পাশাপাশি মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রাখে সে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, এক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলে মারা যাওয়ায় তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। এই সুযোগে সাদ্দাম ওই ভাইস চেয়ারম্যান সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে বিভিন্নভাবে সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ আছে বলে বিশ্বাস করায়। তারপর তার কাছ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের টিকেট নিয়ে দেয়ার কথা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা নেয়ার পর থেকে তার সঙ্গে যোগায়োগ বন্ধ করে দেয়। সোমবার সে জানতে পারে সাদ্দাম তার স্ত্রীকে নিয়ে শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে। সে তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশকে জানালে স্ত্রীসহ তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, আটককের পর তার মোবাইল ফোন থেকে দেখা যায়, সে অবৈধ ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
এ সময় অতিরিক্তি পুলিশ সুপার এ কে এম আল মামুন চিশতী ও গাজীউর রহমানসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।