জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

শয্যা ও আইসিইউর সংকটের সমাধান কোন পথে

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে এখন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ওপর চাপ বাড়ছে। দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে করোনার ডেল্টা (ভারতীয়) ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত বিস্তারের আশঙ্কা অনেক দিন ধরেই ছিল। সে আশঙ্কা বাস্তবে রূপ নিয়েছে এখন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য হাসপাতালে শয্যা ও আইসিইউর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই শয্যা খালি নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকার বাইরে থেকে প্রতিদিন দুইশর বেশি রোগী আইসিইউর জন্য আসছে। এত রোগীকে আইসিইউ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য রোগীরা অপেক্ষমাণ। অনেকেই চিকিৎসা গ্রহণের আগে মারা যাচ্ছে। এমন মর্মস্পর্শী সংবাদ প্রতিদিন দেখছি। সত্যিই আমরা মর্মহত। এমন পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ও সেবার বিষয়টি আশানুরূপ হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, প্রস্তুতিতে নানা দুর্বলতা আছে। জেলা-উপজেলা থেকে রেফার্ড রোগীদের চাপ বাড়ছে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যে দেখা যায়, রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংখ্যা ৩৯৩টি। সাধারণ শয্যাতেও বাড়ছে ভিড়। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে শয্যার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ৩ হাজার ৭৫৫টি। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর অধিকাংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতাল শয্যা ও আইসিইউর যে সংকট চলছে, তা থেকে উত্তরণে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। চিকিৎকরা বলেছেন, একেবারে শেষ মুহূর্তে রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার ফলে আইসিইউর প্রয়োজন পড়ছে। যদি সময়মতো করোনা টেস্ট এবং চিকিৎসা শুরু করা হতো, তাহলে রোগী যেমন সুস্থ হয়ে উঠত, তেমনি হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে হতো না। সচেতনতার অভাবের ফলেই হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষ একেবারে উদাসীন। এখনই সতর্ক হতে হবে, সচেতন হতে হবে। ইতোমধ্যে জীবিকার তাগিদে গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে। তবে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে মানুষের যে ছোটাছুটি তাতে সামনে দেশকে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হতে পারে। সামনে করোনা মোকাবিলা একটা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। এই চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য যে সক্ষমতা ও প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা আমাদের সামান্যই রয়েছে। বর্তমানে করোনা সামাল দেয়ার জন্য চিকিৎসকের ঘাটতি শুধু নয়, ঘাটতি রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জামাদিরও। বিশেষ করে জেলা সদর হাসপাতালগুলোয় প্যাথলজিস্ট ও মাইক্রো বায়োলজিস্ট নেই। এ পরিস্থিতিতে দেশের স্বাস্থ্য খাতে ১৭ হাজার জনবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জামাদির প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। দেশের চরম সংকটে বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা কী, তা প্রশ্ন রয়েছে। সরকারি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে বা তত্ত্বাবধানে বেসরকারি চিকিৎসা খাতকে করোনা সংকট মোকাবিলায় আরো যুক্ত করা প্রয়োজন। বেসরকারি খাতও আপাতত ব্যবসা ও মুনাফার ভাবনা স্থগিত রেখে মানবতার স্বার্থে এগিয়ে আসবে- এমনই প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়