জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

লালমনিরহাটে প্রকাশ্যে তৈরি হচ্ছে অবৈধ পলিথিন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, লালমনিরহাট : সরকার যখন পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পাটের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ঠিক সেই সময়ে লালমনিরহাটে প্রশাসনের নাকের ডগায় কারখানায় তৈরি হচ্ছে শত শত বস্তা পলিথিন। অথচ দেখার কেউ নেই।
গত রবিবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেল লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে লালমনিরহাট-মোগলহাট মহাসড়কের সাকোয়া বাজারেই এই পলিথিনের কারখানাটি অবস্থিত। বাজারে একটি জ¦ালানি তেল বিক্রেতার ঘরের সঙ্গেই লাগোয়া দালান ঘর। সেই দালানঘর ভাড়া নিয়ে ঢেউটিন দিয়ে ঘিরে অবৈধ পলিথিন কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সাকোয়া বাজার একটি জনবহুল ও ব্যস্ততম এলাকা। মোগলহাট পাকা সড়কের পাশে ঘরের এই অবৈধ পলিথিন কারখানাটির মেশিনের শব্দ যাতে কেউ শুনে বুঝতে না পারেন সেজন্য দালান ঘরের বাইরে টিনের বেড়া দেয়া হয়েছে। বাজারে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে দালান ঘরে টিনের বেড়া। সেখানে সবার প্রবেশ নিষেধ থাকলেও কৌশলে উঁকি দিতেই দেখা যায় ভেতরে কয়েকজন শ্রমিক কাজে ব্যস্ত। অনেকক্ষণ টোকা দেয়ার পর দরজা খোলেন একজন। ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল পলিথিন তৈরির কাঁচামালের স্তূপ। সেই ঘরে একদিকে ঘুরছে মেশিনের চাকা, অন্যদিক দিয়ে বের হচ্ছে পলিথিন। শ্র্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কারখানার মালিকের নাম আ. সালাম। তিনি লালমনিরহাট রেলওয়ে বাজারের একজন পুরনো পলিথিন ব্যবসায়ী। একসময় সরকার পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করলে তিনি একতরফা পলিথিনের ব্যবসা একাই করে লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন। আজ তিনি নিজেই একজন পলিথিন কারখানার মালিক।
এ বিষয়ে কারখানার মালিক সালামের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, জি- আমিই ওই পলিথিন কারখানার মালিক। এখানে কিছু লোকের কর্মসংস্থানের জন্য এ পলিথিন কারখানা শুরু করেছি। অনুমতি এখনো পাইনি তবে আবেদন করেছি। শিগগিরই বৈধ কাগজপত্র পর্যায়ক্রমে করা হবে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাট-মোগলহাট সড়কের সাকোয়া বাজারসংলগ্ন দীর্ঘদিনের জ¦ালানি তেল ব্যবসায়ী জহরুল হকের ঘর ভাড়া নিয়ে আ. সালাম অবৈধ নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা গড়ে তোলেন। সেখানে একপাশে জ¦ালানি তেল আর অন্য পাশে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বিপজ্জনক দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে ওই কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি করে লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে। বর্তমানে এই পলিথিন কারখানার পলিথিন দিয়েই লালমনিরহাট জেলার বাজার সয়লাব।
এই কারখানাটির ব্যাপারে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন একটা অভিযান দেখা যায় না। কিছু লোক দেখানো অভিযান চললেও তখন মালিকরা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। লালমনিরহাটে পলিথিন ব্যবসা জেলার একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। বাজারজাতকরণেও রয়েছে তাদের ‘পরিবহন সিন্ডিকেট’। এই সিন্ডিকেটটি পলিথিন উৎপাদনের ছাড়পত্র না নিয়েই পলিথিন ব্যাগ তৈরি করছে।
এ ব্যাপারে গত রবিবার কথা হলে জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, লালমনিরহাটে পলিথিন কারখানা হবে এ বিষয়ে আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র পাইনি বা আমাদের কাছে কেউ আবেদনও করেনননি। সারাদেশে পলিথিন ব্যবহার সরকার নিষিদ্ধ করেছে। ওই কারখানার বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়