জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

নেই মানসিক ভারসাম্য : দেড় যুগ শিকলে বন্দি রবিউল

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) থেকে : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রবিউল ইসলাম নামে এক যুবক গত দেড় যুগেরও অধিক সময় ধরে শিকলে বন্দি। মাত্র ১০ বছর বয়সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ১৮ বছর ধরে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
গত শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিউল ইসলাম বাড়ির একটি ভাঙা ঘরের ভেতর ছোট গর্তে শুয়ে আছে। কোমরে লোহার শিকল বাঁধা। মুখে ঘন দাড়িভর্তি। পরনে কোনো কাপড় নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় রবিউল ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্ণিচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের বড় ছেলে। বাবা নুরুল ইসলাম পেশায় একজন কৃষক। আর্থিক অবস্থা নাজুক হওয়ায় পরিবারের একটু সচ্ছলতার জন্য মাঝে মাঝে ভ্যান চালিয়ে বাড়তি উপার্জনের চেষ্টা করেন। ছেলের মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থা তাকে প্রচণ্ডভাবে ব্যথিত করলেও তিনি নিরুপায়। পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সামান্য জমিজমা আর নিজের অর্জিত উদ্বৃত্ত অর্থের সবই ছেলে রবিউলকে সুস্থ করতে তার চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করেছেন। চিকিৎসক, কবিরাজ, ফকির সবই দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।
রবিউলের বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, রবিউল ১০ বছর পর্যন্ত সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। হেসে খেলে বেড়াত। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ করে তার মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থা দেখতে পাই। এরপর নিজের সাধ্যমতো চিকিৎসার চেষ্টা করেও সুস্থ করতে পারিনি। রবিউলের ছোট ভাই ইনামুল হোসেন বলেন, বর্তমানে ভাই যে ঘরে থাকেন এখানে আমাদের মুদি দোকানঘর ছিল। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর এই ঘরেই আমার ভাইটা এভাবে পড়ে আছেন। মাজায় ও পায়ে শিকল দিয়ে বাঁধা। সারাদিন শুধু হাত দিয়ে মাটি খোঁড়েন। হাঁটতে পারেন না, কথা বলতে পারেন না। শরীরে কোনো কাপড়-চোপড় রাখেন না।
এ ব্যাপারে ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বলেন, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। শিকল খুলে দিলেই ও অন্যত্র চলে যায়। কাপড়ও পরনে রাখতে চায় না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে ওদের পরিবারের কেউ কখনো সাহায্যের ব্যাপারে আসেনি। এলে আমি নিশ্চয়ই সাহায্য করব।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ রবিউলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক ৫ হাজার টাকা ও খাদ্যসামগ্রী দেন।
এছাড়াও রবিউলের থাকার জন্য একটি ঘর এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন। এ সময় ইউএনওর সঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়