জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

নান্দনিক ও পরিচ্ছন্ন পৌরসভা করতে চাই : এডভোকেট মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজা মেয়র, বোদা পৌরসভা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এন এ রবিউল হাসান লিটন, বোদা (পঞ্চগড়) থেকে : ২০০১ সালে বোদা পৌরসভা ঘোষণা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে পৌরসভাটির কার্যক্রম শুরু হয়। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনির্বাচিত পৌর প্রকাশক প্রশাসনকার্য পরিচালনা করেন। এ সময় সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে আদালতে বিভিন্ন আপত্তি উত্থাপন হলে দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাচন হয়নি।
বোদা পৌরসভার বয়স দুই দশক অতিক্রম করেছে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর নতুন পৌর প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করে। দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর অতিক্রম করতেই করোনা সংক্রমণের কারণে সব পরিকল্পনা ও কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
এডভোকেট মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজা বোদা পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র। তিনি বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ভোরের কাগজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পৌর মেয়র সুজা বলেন, রাস্তাঘাট, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানসহ সরকারের সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় গৃহীত কর্মসূচি সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশন বোদা পৌরসভার প্রধান সমস্যা। সুপেয় পানির জন্য সরকারের কাছে প্রজেক্ট দাখিল করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পেয়েছি, যা পর্যায়ক্রমে চলছে। এরই মধ্যে ৩নং ওয়ার্ডে ৩৬০ মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬নং ওয়ার্ডে ১১০ মিটার, ৯নং ওয়ার্ডে ৫৫ মিটার ড্রেনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া যেখানে ড্রেন প্রয়োজন, সেখানে ড্রেনের ব্যবস্থা করা হবে।
পৌরসভার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। ৯নং ওয়ার্ডে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা

ব্যয়ে ৮৫৪ মিটার এবং ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ১৪৮ মিটার, ১নং ওয়ার্ডে দেড় কিলোমিটার ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, ৩নং ওয়ার্ডের টিএনটি রোডে ৩০ লাখ টাকা, অমর দাসে ২০ লাখ টাকা, ৪নং ওয়ার্ডে ৯০৪ মিটার রাস্তা আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে পাকাকরণের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। তাছাড়া ৮নং ওয়ার্ডে পাথরাজ নদীতে দুটি বেইলি ব্রিজের কাজ চলছে।
মেয়র বলেন, বোদা হাট থেকে বোদা পৌরসভায় উন্নীত হয়। আগে থেকে অনেক বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করা যাচ্ছে না। সে কারণে মানুষ চলাচলে বিঘœ হচ্ছে। রাস্তাগুলোকে প্রশস্ত করার পরিকল্পনা আছে, যা পর্যায়ক্রমে করা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি ছিল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নত করা। তো এরই মধ্যে আমি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। সড়কবাতি স্থাপনের কাজ প্রায় শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বোদা পৌরসভা এখন আলোকিত একটি শহর।
মেয়র আরো বলেন, পৌরপিতা হিসেবে প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা আমার আছে। সেগুলো হচ্ছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা, শিশুপার্ক ও মিনি স্টেডিয়াম স্থাপন। শিশুপার্ক ও মিনি স্টেডিয়ামের জন্য একটি প্রকল্প সরকারের কাছে জমা দেয়া আছে। প্রায় ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ মিনারের কাজ শেষের দিকে। এরই মধ্যে বোদা বাজার মসজিদে অজুখানা ও ওয়াশরুম এবং ধানহাটিতে একটি ওয়াশরুম করা হয়েছে। আরো কয়েকটি ওয়াশরুম করার পরিকল্পনা আছে।
তিনি বলেন, বয়স্ক-বিধবা-স্বামী পরিত্যাক্ত ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়তা ভাতা সুষম বণ্টন পদ্ধতি এবং সরকারের দিকনির্দেশনা মোতাবেক দেয়া হচ্ছে। পুরুষ ৬৫ বছর এবং মহিলা ৬২ বছর বয়সিদের বয়স্ক ভাতা দেয়া হয়। আগে ৬৫ বছরের উপরে বয়স্কভাতার নীতিমালা ছিল। কিন্তু বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ড প্রদর্শনের কারণে বয়সসীমা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি নিয়মে অনলাইনে আবেদন করার কারণে অনেক বয়স্ক ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ডে প্রকৃত বয়স না থাকায় তারা ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের উচিত ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করে প্রকৃত বয়স্ক ব্যক্তিদের বাছাই করে ভাতা নির্ধারণ করা। সেক্ষেত্রে ৬৫, ৭০, ৭৫ বছরের বয়স্ক নাগরিকরাই ভাতা পাবে। আমি সরকারের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার পৌরসভায় গরিব মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার, যা মূল জনগোষ্ঠীর অর্ধেক। পৌরসভা থেকে ব্যক্তিগত কোনো প্রকল্প নেই। এডিপি ও সরকারি বরাদ্দকৃত প্রকল্প চালু আছে। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে পৌর এলাকায় কোনো বরাদ্দ না থাকায় বিশেষ করে টিআর, ভিজিডি ও বিজিএফের আওতায় প্রকল্প গ্রহণের কোনো বরাদ্দ না থাকায় এসব জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন ও স্বাবলম্বী করা যাচ্ছে না।
পৌরসভারটি গঠনের পর কাজের খোঁজে গ্রাম থেকে কর্মহীন মানুষের আগমন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব জনগোষ্ঠী নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানে সরকারি অনুদান ও দাতা সংস্থার বরাদ্দকৃত অর্থের সুনির্দিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়া অন্য কোনো পরিকল্পনা গ্রহণের সুযোগ নেই। ফলে পৌরসভার নাগরিকদের সব সুবিধা সুনিশ্চিত করে একটি সমৃদ্ধ ও নান্দনিক এবং পরিচ্ছন্ন পৌরসভা হিসেবে গঠন করা একটি চ্যালেঞ্জ বলে জানান পৌর মেয়র। পৌরসভার মধ্যে অনেক খাস জমি রয়েছে, সেসব জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প চালু করে গৃহহীনদের পুনর্বাসন করার জোর দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে মেয়র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়