জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

দুই অডিও ফাঁস, হেলেনার বিরুদ্ধে আরেক মামলা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠনের পোস্টার ঘিরে বিতর্কে আসার পর গ্রেপ্তার আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে কথিত আইপি টিভি জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাবেক ভোলা জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক ভোলা টাইমস পত্রিকার বর্তমান নির্বাহী সম্পাদক মো. আবদুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
প্রতারণার অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলায় জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পল্লবী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু সাঈদ আল মামুন।
এদিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুটি ফোনালাপের অডিও ক্লিপস ফাঁস হয়েছে। সেখানে তাকে তার কথিত জয়যাত্রা টিভির নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের বিষয়ে কথা বলতে শোনা গেছে।
পল্লবী থানায় গতকাল দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা ও উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে ২০১৮ সালে ১০ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরে জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসে গেলে তাকে ভোলা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে তাকে ক্যামেরা সরবরাহের কথা বলে নগদ ২০ হাজার ও বিকাশে ১০ হাজার টাকা নেয়া হয়। এরপর সরকারি অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ হাজার করে ২৪ হাজার টাকা নেয়া হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিনিধি পদে বহাল রাখতে নিজ নিজ এলাকায় ক্যাবল অপারেটরদের মাধ্যমে জয়যাত্রা টেলিভিশনের সম্প্রচার করতে বাধ্য করা হয়। পরে জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতারণা সম্পর্কে বুঝতে পেরে নিজের দেয়া ৫৪ হাজার টাকা ও ৩২ মাসের বেতন দাবি করলে তুহিনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়। শুধু তুহিন নয়, সব প্রতিনিধির সঙ্গেই এ ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে শোনা যায়, অজ্ঞাত ব্যক্তি হেলেনাকে বলছেন, কাল পরশু নতুন একটা গেস্ট পাঠাব। বিএনপির এক নেতা আছে তো! হেলেনা প্রশ্ন করেন, বিএনপি না আওয়ামী লীগ? অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, আরে বিএনপির। মোংলার রামপাল আছে না? ওখানের এমপি ইলেকশন করছিল। হেলেনা বলেন, ‘টাকাটুকা দিবে?’
অজ্ঞাত সেই লোক বলেন, আরে নাহ। এমনি যাবে। হেলেনার উত্তর, টাকা দিলে একেবারে ভাইরাল করে দিব। একদম। পরবর্তীতে এমপি ফাইনাল। আমি তো ভাইরাল করার ওস্তাদ। অন্যপ্রান্ত থেকে ওই ব্যক্তি বলেন, প্রাথমিক স্টেজে তো চাওয়া

যায় না! আগে ইনভলব করি। এদের তো পরে মুরগি বানাব।
অন্য এক অডিও ক্লিপসে হেলেনা তার ব্যক্তিগত সহকারীকে বলেন, মালয়েশিয়ার মেহেদী আছে না? ও বারবার আমাকে ডিস্টার্ব করতেছে এসএমএসে। বিভিন্ন মানুষকে দিয়ে কল করাচ্ছে। তুমি তাকে বলবা ঠিক আছে, আপনি ৫ লাখ টাকা দেন। ম্যাডামকে আমি রাজি করাই। ইউ মেক পলিসি এপ্লাই। বুঝছ? পলিসি মেক না করলে মেকার হতে পারবে না।
অন্য প্রান্ত থেকে পিএস বলেন, আজকে কি কল করেছিল ম্যাম? হেলেনা বলেন, নানান মানুষকে দিয়ে আমাকে ফোন করাচ্ছে। পুলিশ আছে না একটা? অন্য প্রান্ত থেকে বলতে শোনা যায়, পারভেজের কথা কি বলে? হেলেনা বলেন, ওর কথা বাদ। তুমি বলো মাসে ১ লাখ করে টাকা দেন। ৫-৬ মাস পর আপনাকে ব্যুরো চিফ বানাইয়া দিব মালয়েশিয়ার। আমাদের তো এখন টাকা দরকার। আমাকে দিয়েন না। অফিসকে দেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসা থেকে দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র‌্যাব। সিলগালা করে দেয়া হয় জয়যাত্রা টেলিভিশন। পরে শুক্রবার গুলশান থানায় দুটি এবং পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। এর মধ্যে গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়