জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

দুঃসময়ে রেফারেল হাসপাতালের ভূমিকা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ ও বিশ্ব আজ কোভিড-১৯ মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশে যার শুরু ২০২০ সালের মার্চ থেকে। এরপর দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ এই মহামারি প্রতিরোধ করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করলেও এই রোগের নতুন নতুন ধরন দেখা দেয়ায় সরকারি পর্যায়ে এটিকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আক্রান্তের হার এখন প্রায় ৪০ শতাংশ, যা দেশের জন্য অশনি সংকেত। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে দেশের সীমান্ত বন্ধ প্রায় অনেকদিন। দেশজুড়ে চলছে কঠোর লকডাউন। এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন সরকার অনুমোদিত বেসরকারি রেফারেল হাসপাতালগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা এই রেফারেল হাসপাতালগুলোকে সরকার কোটি কোটি টাকা শুল্কমুক্ত যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে গবেষণা ও সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসার দ্বার উন্মোচিত করেছে। অনুমোদিত বেসরকারি রেফারেল হাসপাতালগুলোকে ২৫১টি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি শুল্কমুক্তভাবে আমদানির সুবিধা দেয়া হয়। পরবর্তীতে এসআরওর মাধ্যমে আরো বেশকিছু চিকিৎসা যন্ত্রপাতি বিনাশুল্কে আমদানির সুবিধা দেয়া হয়।
পাঠকের কাছে রেফারেন্স হাসপাতালের বিষয়টিকে স্পষ্ট করার জন্য উল্লেখিত এসআরওগুলোতে রেফারেল হাসপাতাল কী এবং কেন উল্লেখ করা হয়েছে তা তুলে ধরছি। এসআরওতে বলা হয়েছে, ‘এই প্রজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রেফারেন্স হাসপাতাল বলতে’ সড়হড় ফরংপরঢ়ষরহধৎু অথবা সঁষঃর ফরংরপরঢ়ষরহবধৎু হাসপাতালকে বুঝাইবে। মনো ডিসিপ্লিনারি হাসপাতালের ন্যূনতম শয্যা সংখ্যা ১৫০ ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতালের ন্যূনতম শয্যা সংখ্যা ৩০০ হতে হবে। উক্ত হাসপাতালের বিভাগগুলো সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যূন দুজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। পর্যাপ্ত ও আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ থাকতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা সম্পন্ন হতে হবে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশেষায়িত এবং উন্নত চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং গবেষণা সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হতে হবে এবং দেশের অন্যন্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক সেবাদানে সক্ষম হতে হবে। তাহলে সংজ্ঞা অনুযায়ী এখন স্ক্যানিং করে দেখা প্রয়োজন এই হাসপাতালগুলো যদি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় তাহলে এই অতিমারিকালে এদের গবেষণা কোথায়? সরকারকে কীভাবে এরা সহায়তা করছে?
এই সুবিধাপ্রাপ্ত হাসপাতালে গরিব জনগোষ্ঠীকে স্বল্পব্যয়ে চিকিৎসা সুবিধা দেয়ার কথা। এখানে উল্লেখ্য, এ করোনা মহামারিতে আইসিইউ ভ্যান্টিলেটর একটি অপরিহার্য চিকিৎসা যন্ত্র। রেফারেল হাসপাতাল সুবিধাপ্রাপ্ত ২৫১টি শুল্কমুক্ত যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে এটিও অন্যতম।
লেখার শুরুতেই আমি উল্লেখ করেছি রেফারেল হাসপাতালের পূর্বশর্ত হচ্ছে উন্নত ও আধুনিক গবেষণা সুবিধা, উন্নত চিকিৎসাসেবা ও অন্য হাসপাতালকে রেফারেল সুবিধা দেয়া। ওপরে উল্লিখিত অধিকাংশ হাসপাতাল যারা রেফারেল সনদধারী বেসরকারি হাসপাতাল এবং হাসপাতালগুলোর অবস্থান অধিকাংশ ঢাকায় হলেও চট্টগ্রামে ২টি সিলেটে ১টি, সিরাজগঞ্জে ১টি অর্থাৎ মোটামুটিভাবে দেশের প্রধান শহরগুলোতে অবস্থিত। এই মহামারি বা অতিমারিকালে এই হাসপাতালগুলো রাষ্ট্র এবং জনগণকে তাদের সেবা এবং গবেষণা সেলের মাধ্যমে কোভিড নিয়ন্ত্রণে সহায়তা দিতে পারে এবং উচিত। এই হাসপাতালগুলোকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ছাড়ের সুবিধা দিয়ে সরকার দেশের চিকিৎসাসেবায় তাদের অবদান রাখার সুযোগ করে দিয়েছে, যা আজ তাদের প্রমাণ করার সময় এসেছে। সরকারের পাশাপাশি থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গবেষণা ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই রেফারেল হাসপাতালগুলোর দায়িত্ব অপরিসীম। যদি তারা তা না করে তাহলে তাদের রেফারেল সনদ বাতিল করাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে এবং এই লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা যেতে পারে।
জনগণের করের টাকার সুবিধাভোগী এই হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যয়ও কম হওয়া আবশ্যক এবং জাতীয় এই দুর্যোগের সময়ে স্বাস্থ্যসেবায় তাদের অবদান রাখা সরকারি সুবিধাপ্রাপ্ত হাসপাতাল হিসেবে অবশ্যই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
আ ফ ম মোদাচ্ছের আলী
লেখক : শিশু সাহিত্যিক, লেখক ও গবেষক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়