জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

কুষ্টিয়ায় অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলে সেই মনির আয়রন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : অধিকাংশ সিল্ডিারের মুখে সাদা রঙ দেয়া এবং মনির আয়রন লেখা। সিলিন্ডারগুলোতে সর্বোচ্চ ১২০০ থেকে ১৫০০ চাপ রয়েছে। চিকিৎসারত রোগীরা ছটফট করছেন। গত ২৬ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজন রোগীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ওই সাদা রঙের ছোট সাইজের সিলিন্ডারে অক্সিজেন আছে কিনা বোঝার উপায় নেই। তাদের ধারণা, মনির আয়রন সিলিন্ডারে অক্সিজেন না দিয়ে কোনোটা অর্ধেক দিয়ে পুরো রিফিল করা বলে হাসপাতালে

সরবরাহ করছে। এতে তাদের রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স এসব অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিষয়ে অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ থাকছেন বলে রোগীর অভিভাবকদের অভিযোগ। অক্সিজেন সিলিন্ডারে ২ হাজারের পরিবর্তে মাত্র ১২০০ থেকে ১৫০০ প্রেসারে অক্সিজেন দিয়ে হাসপাতালে সরবরাহ করায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে- এমন বিবেচনায় গত ২৭ জুলাই রাতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ হাসপাতালে মনির আয়রন থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল গ্রহণ না করতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেনকে নিদের্শনা দেন।
তিনি বলেন, মনির আয়রনের অক্সিজেন সিলিন্ডার ইন্ডাস্ট্রিয়াল, তার কাছ থেকে আর কোনো সিলিন্ডার রিফিল নেয়ার প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি যশোরে অক্সিজেন রিফিল সেন্টার বন্ধ হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৩১ জুলাই পুনরায় মনির আয়রন থেকে সিলিন্ডার রিফিল গ্রহণ শুরু করে। গতকাল ১ আগস্ট পুনরায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এখানে সংশ্লিষ্ট মহলের সন্দেহ এখন মনির আয়রনের দিকে।
এ ব্যাপারে মনির আয়রনের স্বত্বাধিকারী মনির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এসব ঠিক না। আমি একা হাসপাতালে সিলিন্ডার দিচ্ছি, না আরো অনেকে দিচ্ছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন জানান, রবিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তদের মধ্যে কুমারখালী আট, দৌলতপুরের ৩১, ভেড়ামারায় চার, মিরপুর ২৯, খোকসায় ১৩ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার গতদিনের চেয়ে বেড়ে ৩৩.৯৫ শতাংশ হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০৮ জন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় মানুষ আগের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ায় একজনের দ্বারা অনেক লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসককে আরো কঠোর হতে হবে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড ঘোষণার পর থেকে রোগীর চাপ বাড়ছে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদেও লোকবল কম। এজন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্টতা সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আকরামুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে দুই শতাধিক পয়েন্টে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ১৭টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা চালু রয়েছে। বেশি গুরুতর রোগীদের আলাদাভাবে পেয়িং ওয়ার্ডে রাখা হয়। ঈদ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। রোগী বাড়লেও চিকিৎসাব্যবস্থা ও ভর্তির ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসার এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ায় গত দুই মাসে করোনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। তবে, আশা করা যাচ্ছে, এটি কমে যাবে। প্রায় সবাই মৃদু সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য ঈদ পরবর্তী আক্রান্তের হার কমতে পারে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসিমুল বারী বাপ্পি জানান, করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ৩০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার মধ্যে ১২টি নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়