হেফাজতের সহিংসতা : এজাহারনামীয় এক আসামি গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

বোল্টের সিংহাসনে বসলেন জ্যাকবস

পরের সংবাদ

টানা বর্ষণে বেতাগীর জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

লিপিকা মণ্ডল, বেতাগী (বরগুনা) থেকে : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত চার দিনের অতিবর্ষণ আর ঝড়ো বাতাসে দক্ষিণের উপকূলের জেলা বরগুনার বেতাগী উপজেলার জীবনযাত্রা থমকে গেছে। অতি বর্ষণে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার কারণে বীজতলা পানির মধ্যে তলিয়ে রয়েছে এবং পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ভারি বর্ষণের পাশাপাশি নদ-নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এলাকায় অসংখ্য পুকুর, ঘের পানিতে ডুবে অনেক মাছ ভেসে গেছে। আউশ খেত, আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। ঝড়ো বাতাসে উপচে পড়েছে গাছপালা।
ঝড়ে বুধবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এখনো বিদ্যুৎ ব্যবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। রাত ও দিনের অধিকাংশ সময় ভোগান্তিতে কাটাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। ফলে  ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কও প্রায়ই বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে শহরের রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল ছিল কম। বৃষ্টিতে অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাটে পানি জমে গেছে। বিষখালী নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়  ছোট ঝোপখালী, কেওয়াবুনিয়া, উত্তর বেতাগী, বাসন্ডা,  ছোট মোকামিযা, বদনীখালী, গ্রামার্দ্দন, আলীয়াবাদ, কালিকাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। বাড়িঘরে পানি ঢোকায় এসব এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে কাঁচা বসতঘর, আবাসন জোয়ারের পানির চাপ আর বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়। উপজেলার ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এসব পানিবন্দি পরিবার বসতঘর-রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় রান্না বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পরিবারের।  
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ উপজেলায় ৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ করা হয়। এর মধ্যে এবারের দুর্যোগে ১ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। আবাদকৃত ১ হাজার ১২০ হেক্টরে আমনের বীজতলার মধ্যে ৬৭২ হেক্টর আক্রান্ত এবং ২৫০ হেক্টর শাকসবজির মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ ২০০ হেক্টর। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো. সিদ্দিকুর রহমান ও মো. নফিছুর রহমানসহ একাধিক কৃষক জানান, ‘তাদের গ্রামের বেশিরভাগ জমির সবজি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে লাউ, শসা, চিচিঙ্গা এবং চাল কুমড়া বেশি ক্ষতি হয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানান, কৃষিতে এখনো অপূরণীয় ক্ষতিমুখে পড়তে হয়নি। তবে আরো দুই-একদিন এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমন বীজতলা, সবজি এবং পানের বরজের কৃষকদের।
এদিকে উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, বিষখালী নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও ভারি বর্ষণে ৯৬৭টি ছোট-বড় পুকুর, ৮টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। অতিরিক্ত পানিতে প্লাবিত হয়ে এসব ঘের ও পুকুর থেকে মাছ ভেসে গেছে। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৎস্যচাষি সুকদেব হাওলাদার জানান, পানিতে তার একটি পুকুর থেকে ৫০ হাজার টাকার মাছ চলে গেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান, ভারি বর্ষণে মৎস্য ক্ষেত্রে  এ উপজেলায় প্রাথমিকভাবে আনুমানিক সাড়ে ৪০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়