‘পিক’ টাইমে কঠোর লকডাউনে উদ্বেগে পোশাক খাত

আগের সংবাদ

পদক লড়াইয়ে তিন দেশের দাপট

পরের সংবাদ

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশাহারা ফুলছড়ির পিপুলিয়া গ্রামবাসী

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহ আলম যাদু, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) থেকে : ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি ইউনিয়নের পিপুলিয়া গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তীরবর্তী মানুষ। এবারের ভাঙনে ওই এলাকার ৩ শতাধিক পরিবারের বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। পাড়ের লোকজন ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন। ঈদের আগের দিন থেকে ভাঙন শুরু হলেও শনিবার মাত্র একদিনের ব্যবধানে ৪৫ পরিবারের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গাছপালা ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে একটি আদর্শ গ্রাম, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মসজিদ, একটি ঈদগা মাঠসহ কয়েকশ পরিবারের ঘরবাড়িসহ শত শত একর ফসলি জমি। গৃহহীন মানুষ আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন উঁচু ফাঁকা স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। হুমকির মুখে পড়া পরিবারগুলো আগেভাগেই ঘরের আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ফুলছড়ি ইউনিয়নের পিপুলিয়া গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা নদী পাড়ে বসে অশ্রæচোখে শুধু ভাঙনের দৃশ্য দেখছেন। আর হুমকির সম্মুখীন পিপুলিয়া গ্রামের পরিবারগুলো অন্যস্থানে যাওয়ার জন্য বাড়িঘর, আসবাবপত্র ও গাছপালাসহ সম্ভাব্য জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
পিপুলিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান ফকির (৭০) বলেন, ‘এমন ভাঙন জীবনেও দেহি নাই। বাড়িঘর সরানোর সময় পর্যন্ত দেয় না। সারারাত ঘুমাতে পারি নাই। কেবল একটাই চিন্তা কখন যে ঘরসহ বসতভিটা নদীতে চলে যায়। ভোর রাত থেকে ঘর ভাঙা শুরু করেছি, খাওয়া-দাওয়া নাই। শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে পারব কিনা জানি না।’
পিপুলিয়া গ্রামের সুরুজ্জামান, বেলাল হোসেন বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়।
বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। ভাঙন আতঙ্কে রাতে দুচোখে ঘুম আসে না। বুকে কাঁপুনি নিয়ে রাতের পর রাত নির্ঘুম পার হচ্ছে।’ একই এলাকার হালিমা বেগম বলেন, ‘নদীভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আজ আমরা নিঃস্ব-অসহায়। অন্যের জমিতে ছাপরা তুলে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এখন কী করব, কোথায় যাব, ভেবে দুচোখে অন্ধকার দেখছি।’ প্রায় একই ধরনের কথা বলেন ভাঙনের শিকার জেলহক, জাহিদুল ইসলাম, কাশেম, মাজেদা বেগম, মালেক উদ্দিনসহ অনেকে।
ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম কালু বলেন, নদী ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পিপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি সেন্টার স্কুল, পিপুলিয়া সরকারি আদর্শ গ্রামসহ পিপুলিয়া গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মণ্ডল জানান, এবারের ভাঙনে পিপুলিয়া গ্রামে ৩ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। গৃহহীন পরিবারগুলো উঁচু স্থানে অথবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে।
ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজনের মাঝে জিআর ও ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থসহ চাল বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাড়িঘর হারানো পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণের টিন ও নগদ অর্থের দাবি জানানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়