‘পিক’ টাইমে কঠোর লকডাউনে উদ্বেগে পোশাক খাত

আগের সংবাদ

পদক লড়াইয়ে তিন দেশের দাপট

পরের সংবাদ

অলিম্পিকে উপমহাদেশের অর্জন

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এশিয়ার দেশ জাপানে চলছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের প্রতিযোগিতা। অলিম্পিকে বিশ্বের সব দেশ থেকে হাজার হাজার অ্যাথলেট স্বর্ণপদক, রৌপ্যপদক ও ব্রোঞ্জপদকের জন্য লড়ে থাকেন। এবারের টোকিও অলিম্পিকে ১১ হাজার ৯১ অ্যাথলেট ৩৩৯টি ইভেন্টে পদকের জন্য লড়ছেন। ইতোমধ্যে অনেক ইভেন্টের ফয়সালা হয়ে গেছে। আগামী ৮ আগস্ট পর্দা নামার আগ পর্যন্ত পদকের লড়াই চলবে।
অলিম্পিকে বরাবর ভালো সাফল্য পেয়ে থাকে আমেরিকা, চীন, কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো। তবে দক্ষিণ এশিয়া বা ভারত উপমহাদেশের অ্যাথলেটদের সাফল্যের হার খুবই কম। অথচ এশিয়ার অন্য দেশগুলো ঠিকই ভালো সাফল্য পাচ্ছে।
টোকিও অলিম্পিকের আগে বাংলাদেশ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মোট ৯ বার অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু একবারও কোনো পদক জয় করতে পারেনি। এবার একটি পদকের আশায় বাংলাদেশ থেকে ৬ জন অ্যাথলেট টোকিওতে গেছেন। কিন্তু কেউ সাফল্য এনে দিতে পারেননি।
দক্ষিণ এশিয়ায় পদক জয়ের দিক দিকে ভারত সবচেয়ে সফল। দেশটি ১৯০০ সালে সর্বপ্রথম নর্মান প্রিটচার্ড নামক এক দৌড়বিদকে পাঠায়। তিনি অ্যাথলেটিক্সে দুটি সিলভার পদক জেতেন। তার পদক জয়ের মাধ্যমে এশিয়ার কোন দেশ প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে পদক জয় করে। ১৯২০ সালে ভারত একটি বহর পাঠায়। এরপর যতবার অলিম্পিক হয়েছে ততবারই দল পাঠিয়েছে তারা।
ভারত অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত ২৮টি পদক জয় করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ এসেছে হকিতে। ১৯২০ থেকে শুরু করে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত হওয়া গ্রীষ্মকালীন ১২টি অলিম্পিকে হকিতে ১১টি পদক জয় করে। এর মধ্যে রয়েছে ৮টি স্বর্ণপদক। ১৯২৮ থেকে শুরু করে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তারা এই স্বর্ণপদকগুলো জয় করে। কিন্তু হকি দল পরবর্তীতে আর ভালো না করতে পারায় হকিতে আর স্বর্ণ জেতা হয়নি তাদের। ১৯৮০ সালের পর ভারতকে ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে শুটিংয়ে অভিনব বিন্দ্রা স্বর্ণ এনে দেন। যা ভারতের একমাত্র ব্যক্তিগত স্বর্ণপদক। এবার টোকিও অলিম্পিকে ভারোত্তোলনে মীরাবাঈ চানু রৌপ্য এনে দিয়েছেন।
মাউন্ট এভারেস্টের দেশ নেপালও বাংলাদেশের মতো অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত কোনো পদক জয় করতে পারেনি। তারা সব মিলিয়ে ১২ বার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ নিয়েছে। যদিও ১৯২৪ সালে নেপালি-ব্রিটিশ নাগরিক তেজবীর বুড়া স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। কিন্তু সেটি ব্রিটিশদের নামের পাশে যোগ হয়েছে। তাছাড়া ১৯৮৮ সালে সিউলে তায়কোয়ান্দোতেও তারা রৌপ্য জিতেছিল। কিন্তু সে সময় অলিম্পিকে তায়কোয়ান্দো প্রদর্শনী ইভেন্ট হওয়ায় অফিসিয়ালি এই পদকটি বিবেচনা করা হয় না।
পাকিস্তান সর্বপ্রথম ১৯৪৮ লন্ডন অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়। এরপর ১৯৮০ সালের আসর বাদে সবই অংশ নেয় তারা। পাকিস্তান গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে সব মিলিয়ে দশটি পদক জয় করেছে। এর মধ্যে হকিতেই এসেছে ৮টি। এই ৮ পদকের মধ্যে ৪টি হলো স্বর্ণপদক। সর্বশেষ ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে তারা হকিতে স্বর্ণ পায়। কিন্তু এরপর নিজেদের স্বর্ণযুগ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ দুটি অলিম্পিকে জায়গাই করে নিতে পারেনি পাকিস্তান হকি দল। বাকি দুটি পদকের মধ্যে ১৯৬০ সালে রোমে রেসলিংয়ে ও ১৯৮৮ সালে সিউলে বক্সিংয়ে পাকিস্তানের সায়েদ হোসেন শাহ ব্রোঞ্জ পদক জেতেন। বাংলাদেশ ও নেপালের মতো দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ ভুটানও তাদের ইতিহাসে অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত কোন পদক জয় করতে পারেনি। তারা ১৯৮৪ সালে প্রথম অলিম্পিকে খেলে। ২০০৮ সাল পর্যন্ত অলিম্পিকে তারা শুধু আরচার দল পাঠিয়েছে। আরচারি ভুটানের জাতীয় খেলা। ২০১২ সালে তারা একজন শুটারকে পাঠায়। এর মাধ্যমে আরচারি বাদে অন্য কোন ইভেন্টে খেলতে যায় তারা। তবে ওইবার ভুটানের বহরে কোনো পুরুষ অ্যাথলেট ছিল না। ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশের মতো একই অবস্থা মালদ্বীপেরও। তারা এখন পর্যন্ত কোনো পদক জয় করতে পারেনি। তারা ১৯৮৮ সালে সিউল অলিম্পিকে প্রথমবার অংশ নেয়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আয়তনে ছোট দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা অলিম্পিকে খুবই অল্প সাফল্য পেয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত দুটি পদক পেয়েছে। দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮ সালে প্রথম অলিম্পিকে অংশ নেয়। ২০২০ টোকিও অলিম্পিক পর্যন্ত শুধু ১৯৭৬ সালে কানাডা অলিম্পিকে দল পাঠায়নি দেশটি। শ্রীলঙ্কার দুটি পদকের মধ্যে দুটিই এসেছে অ্যাথলেটিক্সে এবং দুটি পদকই রৌপ্য। প্রথমটি আসে ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে। আর দ্বিতীয়টি ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে। অ্যাথলেট সুশান্তিকা জয়াসিগনে সিডনি অলিম্পিকে লঙ্কানদের সর্বশেষ এ পদকটি এনে দেন।
:: মোহাম্মদ তানভীরুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়