বিষাক্ত কেমিক্যালে নামি ব্র্যান্ডের নকল পানীয় তৈরি : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ২

আগের সংবাদ

সংক্রমণ বাড়ার পথ খুলল!

পরের সংবাদ

কৃত্রিমভাবে গরু মোটাতাজা ক্ষতিকর

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। আমাদের দেশে কুরবানিতে গরু প্রাধান্য পায়। গরু দিয়েই কুরবানির চাহিদা মিটে থাকে। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গো-খাদ্যের সঙ্গে মোটাতাজাকরণ সামগ্রী মিশিয়ে খাইয়ে গরু ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করে তোলে। তারা বাড়তি মুনাফার আশায় অল্পদিনের মধ্যে গরু মোটাতাজা করতে গো-খাদ্যের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট ব্যবহার করে। মাংসপেশিতে প্রয়োগ করে নিষিদ্ধ ইনজেকশন, যা গরু ও জনস্বাস্থ্য উভয়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর মাংসপেশিতে ভারতীয় ডেক্সামেথাসন ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয় এবং খাওয়ানো হয় স্টেরয়েড গ্রুপের বিভিন্ন ট্যাবলেট। মূলত স্টেরয়েড গ্রুপের ট্যাবলেট খাওয়ানো বা ডেক্সামেথাসন জাতীয় ইনজেকশন দেয়া হলে গরু খুব শান্ত হয়। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। গরুর ঊরু অনেক বেশি মাংসল মনে হয়। অতিরিক্ত হরমোনের কারণে পুরো শরীরে পানি জমে মোটা দেখায়। আঙুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে যায়। গরুর শ্বাস-প্রশ্বাস দেখেও গরুকে ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। ট্যাবলেট খাওয়ানো হলে গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ফেলে। গরুকে খুব ক্লান্ত দেখা যায় আর সারাক্ষণ হাঁপাতে থাকে। গরুর মুখে অতিরিক্ত লালা বা ফেনা লেগে থাকাও কৃত্রিম উপায়ে গরুকে মোটা করার আরেকটি লক্ষণ।
অনেক খামারি ইদানীং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গরু মোটাতাজা করেছেন, যদিও এ সংখ্যা চাহিদার তুলনায় খুব কম। গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে খামারি ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা খুবই জরুরি। সারাদেশে কুরবানি দেয়ার জন্য প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে, যা প্রতি বছর পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৫-১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী যদি পরিকল্পিতভাবে গবাদিপশু প্রস্তুত করা যায়, তাহলে কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করার প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে গরু চাষিদের প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।
স্টেরয়েড গ্রুপের ট্যাবলেট খাওয়ালে গরুর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে শরীরে পানি জমতে শুরু করে ও গরু মোটাতাজা দেখায়। এ গরু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাই না করলে মারা যেতে পারে অথবা এর গোশত কমতে পারে। এমন গরুর গোশত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর মাংস মানব শরীরে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ক্ষতিকারক ওষুধ খাওয়ানো হলে গরুর মাংস রান্নার পরও তার অবশেষ রয়ে যায়। ফলে ওষুধের অবশেষ অংশ মানবদেহে জমা হওয়ায় মানুষের বিপাক ক্রিয়া কমে যায়। ক্ষতিকারক ওষুধ ব্যবহার করে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানুষের কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত ও রোগ দেখা দেয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব ওষুধ তীব্র তাপেও নষ্ট হয় না। ফলে মানবদেহে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। সেজন্য মনিটরিংয়ের পাশাপাশি আইন ও বিধি অনুযায়ী জেল জরিমানা করাও জরুরি।

মো. জিল্লুর রহমান : গেণ্ডারিয়া, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়