বিষাক্ত কেমিক্যালে নামি ব্র্যান্ডের নকল পানীয় তৈরি : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ২

আগের সংবাদ

সংক্রমণ বাড়ার পথ খুলল!

পরের সংবাদ

ইন্টারনেট সেবার মান বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ক্রমবর্ধমান। বিটিআরসির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ৫৪ লাখ। এর মধ্যে মাত্র ৯৮ লাখ মানুষ ব্রডব্যান্ড সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বাকি ১০ কোটি ৫৬ লাখ গ্রাহকই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন মোবাইল ফোনে। করোনাকালে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি অপারেটরদের সেবাসংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহকের অভিযোগও বেড়েছে। সরকার গ্রাহক হয়রানি রোধে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বিশেষ করে এতে গ্রাহক হয়রানি কমে আসবে এবং গ্রাহক তার ন্যায্য সেবা বুঝে পাবে। তবে বিশাল সংখ্যক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়টিতে নজরদারি জরুরি মনে করছি। মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের জটিলতার খবরও গণমাধ্যমে প্রায়ই আসছে। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রডব্যান্ডের তুলনায় ১১ গুণ গ্রাহক মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও এর মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ ঝুলে আছে দীর্ঘদিন। অথচ দেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ অস্বাভাবিক, সেবার মানও নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। ইন্টারনেট সেবার মূল্য সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কেবল ডট কো ডট ইউকের তথ্য মতে, বাংলাদেশে ৩০ দিন মেয়াদি ১ গিগাবাইট ইন্টারনেট ডাটার মূল্য গড়ে ৭০ সেন্ট (সাড়ে ৫৯ টাকা)। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ সেবার গড় মূল্য মাত্র ৯ সেন্ট (৭ টাকা ৬৫ পয়সা)। আবার গতির হিসেবেও বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের অবস্থা খারাপ। ২০২১ সালে জানুয়ারিতে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ওকলার তথ্য মতে, বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬তম। মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। এই জরিপ দিয়ে আমাদের সেবার মান মূল্যায়ন করা হয়ে যায়। আমাদের দেশের গ্রাহকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এটা বড় প্রমাণ। রাজধানী ঢাকা হোক আর দেশের কোনো ইউনিয়ন হোক- ইন্টারনেট সেবাদাতাদের একই দামে সংযোগ দিতে হবে। নির্ধারিত দামের কম নেয়া যাবে, বেশি নয়। করোনাকালে দেশে ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই বেড়েছে। পড়াশোনা, ঘরে বসে অফিসের কাজ করা এবং বিনোদনের জন্য ইন্টারনেট নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। এমন সময়ে সরকারের এ উদ্যোগ সময়োপযোগী বলে আমরা মনে করছি। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সব মানুষের কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণের প্রথম শর্ত- সর্বত্র ইন্টারনেট সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং এর খরচ জনসাধারণের হাতের নাগালে রাখা। সরকার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম নির্ধারণে যেসব সমস্যা সামনে আসছে, তা সমাধান করে দ্রুত কার্যকর করবে বলে আশা করি। পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ জরুরি। মোবাইল ফোন অপারেটরদের ইন্টারনেটের গতি সমস্যা প্রায় সব এলাকাতেই বিদ্যমান। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যেমন ছড়িয়ে দিতে হবে ইন্টারনেট সেবা, তেমনি এর গতির দিকটিও নিশ্চিত করতে হবে। ইন্টারনেট সেবার পরিধি ও মান বাড়াতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া ডিজিটালাইজেশনের সুফল পাওয়া যাবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়