আপিল বিভাগের আদেশ : ল্যাবএইডের ডাক্তার হত্যায় আমিনুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল

আগের সংবাদ

ঝুঁকি নিয়েই উঠল লকডাউন

পরের সংবাদ

ডাকাতি করতেই খুন করা হয় সুবলকে

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল (৪৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- মাসুদ রানা ও মিজানুর রহমান। কেয়ারটেকারকে আটকে রেখে বাড়ির মালিককে জিম্মি করে ডাকাতি বা লুণ্ঠনের পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে সুবলকে আটকাতে বাধার সময়ই এ ঘটনা ঘটে।
দুই হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের পরিহিত জামার পুড়িয়ে দেয়া অংশবিশেষ ও রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থল থেকে একপিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঁচিটি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত ১১ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানার ৩নং সেক্টরের ১০নং বাড়ির কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল খুন হন। এ খুনের ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু আমরা ঘটনার দুদিনের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ ওই বাসায় ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিল। দেড় মাস আগে সে চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জ চলে যায়। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে কাজ নেয়। গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ এর আগেও প্রায়ই ভিকটিমের রুমে ইয়াবা সেবন করত ও নারী নিয়ে এসে তার কক্ষটি ব্যবহার করত। প্রাথমিকভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল, গভীর রাতে দারোয়ানকে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে রাখবে। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময়ে তারা বাসায় প্রবেশ করে বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে লুণ্ঠন কাজ সম্পন্ন করবে। সে মোতাবেক গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ ভিকটিম সুবলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রধরে গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ ভিকটিমকে জানায় সে ও তার চাচাতো ভাই ঢাকায় এসে রাতে তার কক্ষে থাকবে। সে মোতাবেক ১০ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গ্রেপ্তারকৃতরা কেয়ারটেকারের রুমে প্রবেশ করে ও কেয়ারটেকারের কক্ষে অবস্থান নেয় এবং সেখানে ইয়াবা সেবন করে। পরিকল্পনা মোতাবেক রাত আনুমানিক ৩:৩০টায় ঘুমন্ত ভিকটিমের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে ভিকটিম জেগে উঠে। রুমে থাকা একটি ধারালো কেঁচি ভিকটিমের গলায় ধরে তাকে চুপ থাকতে বলে। গ্রেপ্তারকৃত মিজান ভিকটিমের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ধরলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মাসুদ রানা কেয়ারটেকারের গলায় ধারালো কেঁচিটি ঢুকিয়ে দেয়। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে মিজান ও মাসুদ ভিকটিমের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর গ্রেপ্তারকৃতরা শক্ত করে ভিকটিমের হাত-পা বাঁধে। রুমের বাইরের পানির টেপে শরীরে থাকা রক্তের ছাপ ধুয়ে ফেলে এবং জামাকাপড়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলার চেষ্টা করে। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারকৃতরা মালিকের বাসায় লুণ্ঠনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করে। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জে নিজ গ্রামে চলে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়