গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

গ্যাস বিস্ফোরণ ও আমাদের নিরাপত্তা

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ ও দুর্ঘটনা এখন অহরহই ঘটছে এবং এতে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে একটি ভবনের নিচতলার রেস্টুরেন্ট থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট এবং আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় আগুনের ফুলকি দেখা গেলেও সেখানে আগুন লাগেনি। তবে বিস্ফোরণের মাত্রা এত ভয়াবহ ছিল যে, এটি একই সঙ্গে ৭টি ভবন এবং রাস্তায় থাকা ৩টি বাস ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আশপাশের আরো কটি ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। দমকল বাহিনী বলেছে, এটা মিথানল গ্যাসের বিস্ফোরণ হতে পারে। সাধারণত রেস্টুরেন্টে এ জাতীয় গ্যাস ব্যবহৃত হয়। বিস্ফোরণের ঘটনাটি নিঃসন্দেহে ভয়াবহ এবং দুঃখজনক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্যাস বিস্ফোরণের কারণ গ্যাসলাইনে লিকেজ থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার। সাধারণত দেখা যায়, গ্যাসলাইনের লিকেজ বা ত্রæটির ব্যাপারে ভবনের মালিকরা সচেতন থাকেন না। আবার যারা ব্যবহারকারী তাদেরও অসতর্কতা রয়েছে। আমরা সেই ব্যাপারে ক্রমাগত অবহেলা প্রদর্শন করে আসছি। গ্যাসের পুরনো পাইপলাইনে ক্ষয়, পুরনো কিংবা নতুন পাইপলাইনে ময়লা-আবর্জনা জমে লিকেজ-ছিদ্র ইত্যাদি তৈরি হওয়া, ওয়াসাসহ নানা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংস্কার-উন্নয়ন কাজের সময় পাইপ ফেটে যাওয়া কিংবা পাইপের সংযোগ দুর্বল ও ঢিলা হয়ে যাওয়ার কারণেও এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। আবার গ্যাস বিতরণ লাইন রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অযতœ-অবহেলার কারণেও নাগরিকদের জন্য তা বিপদ ডেকে আনছে। মগবাজারের ঘটনার বিষয়টি গণমাধ্যমে জোরালোভাবে সামনে এসেছে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। রবিবার রাতে গঠিত এই তদন্ত কমিটি সোমবার সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক। সংশ্লিষ্ট গ্যাস কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না। গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে যে হতাহতের ঘটনা ঘটে তা এক কথায় মারাত্মক। গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা এতই আকস্মিকভাবে ঘটে যে, তা থেকে সাধারণত পরিত্রাণ মেলে না। আর অগ্নিদগ্ধে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ ক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ রোধ করতে হলে ভবনের মালিক, বসবাসকারী, গ্যাস বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ সব পক্ষেরই দায়িত্বশীল ও সতর্ক ভূমিকা দরকার। ভবনের মালিকদের অবশ্যই উচিত তার ভবনের গ্যাস সংযোগ নিরাপদ আছে কিনা তা নিয়মিত পরীক্ষা করানো, তাকেই মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা আশা করি, গ্যাস বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়