গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

করোনা মোকাবিলায় সচেতনতাই প্রধান

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন। করোনার উপসর্গ বদলেছে, তাই সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন সচেতনতা, সচেতনতা, সচেতনতা আর সঠিক চিকিৎসা। সারা বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে আক্রান্ত আমরা তখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছি। করোনা এমন কোনো রোগ নয়, যা মানুষের শরীরে এমনি এমনি চলে এসে বাসা বাঁধে। তাকে বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। এদিক থেকে করোনা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন। রাষ্ট্রের জন্য না হোক, নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য হলেও করোনা বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন। করোনা নিয়ে মানুষের উদাসীনতার অন্ত নেই। করোনা বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে হারে উদাসীনতা বেড়েছে তাতে শুধু লকডাউন দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রয়োজন কঠিন কঠোরতা, স্বচ্ছতা ও সততা। শুধু সচেতনতাই পারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে। আমাদের সচেতনতাই পারে আমাদের জীবনকে শঙ্কামুক্ত করতে, করোনামুক্ত রাখতে। প্রতিদিনই মৃত্যুর এবং সংক্রমণের নতুন রেকর্ড হচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তৈরি করতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠবে এবং পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। যেখানে ভারত, আমেরিকার মতো দেশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সেখানে আমাদের কী হবে তা সহজেই অনুমেয়। মাস্ক ব্যবহার করাকে মানুষ এখন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি মনে করে তারা মাস্ক ব্যবহার থেকে বিরত থাকছে। মসজিদ, মন্দির, হাট-বাজার, হাসপাতাল, অফিস, আদালতে সবত্রই মানুষের মাস্ক ব্যবহারে অনীহা লক্ষ করা যায়। জীবিকার তাগিদে মানুষ জীবনকে তুচ্ছ করে ফেলেছে। সচেতনতার সঙ্গে জীবন এবং জীবিকা দুটি চালানো যায়। সচেতনভাবে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই করোনার মতো মহামারি রোধ করা সম্ভব।
জীবিকার তাগিদে জীবনের প্রতি কোনো অবহেলা নয়, হেঁয়ালিপনা নয়। জীবন একবারই। তাই জীবনের প্রতি যতœ নিতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে, দায়বদ্ধতা থাকতে হবে পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি। আমাদের বোঝতে হবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি আর দুর্ঘটনা এক নয়। অনেককে বলতে শোনা যায়, যে পরিমাণ মানুষ করোনায় মারা যায়, তার চেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাদের বলছি, দুর্ঘটনা সংক্রমিত হয় না কিন্তু করোনা সংক্রমিত হয়। তাই বলে আমি সড়ক দুর্ঘটনাকে কোনোভাবেই সমর্থন করি না। এ দুর্ঘটনাও রোধ করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এবং সবার সহযোগিতা ও সচেতনতার মাধ্যমে তাকে মোকাবিলা করতে হয়। আর এই সহযোগিতা ও সচেতনতার মধ্যে কোনো ভুল বা অবহেলা হলে তার ক্ষতির পরিমাণ দীর্ঘমেয়াদি হয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে থাকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সর্বত্র। এর প্রত্যক্ষ ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, শিল্প এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন খাতে। যা আমরা প্রত্যক্ষ করছি করোনার দুই বছরে। পুরো বিশ্ব এক গভীর সংকটে। একদিকে হু হু করে বাড়ছে উদাসীনতা আর উদাসীনতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ এবং মৃত্যু। আমরা আমাদের সামান্য স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুহূর্তেই সচেতনতাকে ভুলে যাই, অসচেতন হয়ে পড়ি। অফিস-আদালত, হাট-বাজার, দোকান-পাট, মন্দির-মসজিদ ইত্যাদিতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা থাকলেও উপেক্ষিত হচ্ছে হরহামেশা। একজন অসচেতন ব্যক্তি নিজের জন্য যেমন ক্ষতিকর ও ভয়ংকর অন্যের জন্যও তেমনি ক্ষতিকর ও ভয়ংকর। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সরকারকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সচেতনতা সম্পর্কে প্রচার করতে হবে, কঠোর হতে হবে। নো মাস্ক নো সার্ভিস কার্যক্রমটি জোরালোভাবে চালু করতে হবে। এর ব্যত্যয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নিজে নিজে সচেতন না হলে শুধু কিছু কর্মসূচি দিয়ে করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়। প্রথমত নিজেকেই নিজের সুরক্ষা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প কোনো নেই। মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই আমরা করোনামুক্ত হতে পারি। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। আসুন নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকে সচেতন করে তুলি। মনে রাখতে হবে আমার আপনার হাতেই আমার, আপনার পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিহিত। আপনি সুরক্ষিত থাকলে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে, নিরাপদ থাকবে, সমাজ, রাষ্ট্র সুরক্ষিত থাকবে, নিরাপদ থাকবে। আপনার আমার সচেতনতার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও নিরাপত্তা।

সুধীর বরণ মাঝি : শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, হাইমচর, চাঁদপুর।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়