১০০ পর্বে ‘জমিদার বাড়ী’

আগের সংবাদ

টাকা পাচার হয় পাঁচ কারণে ** ৩৬ দেশে পাচার হচ্ছে টাকা, সবচেয়ে বেশি ১০ দেশে ** হাতেগোনা মামলা হলেও আটকে আছে আইনি জটিলতায় **

পরের সংবাদ

হারের বৃত্তে মোহামেডান

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগে লড়াই বেশ জমে ওঠেছে। কিন্তু সুপার লিগে এসে হারের বৃত্তে আটকে গেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। শেষ ছয়ের জমজমাট এই পর্বের তিন ম্যাচ খেলে একটিতেও জিততে পারেনি ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি। সুপার লিগে আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে টানা দুই হারের পর গতকাল তৃতীয় ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে হারের তেতো স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাদা-কালোরা। এদিন হোম অফ ক্রিকেট মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শামসুর রহমান শুভর ৪৯ ও পারভেজ হোসেন ইমনের ৪৬ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ১৩৩ রান সংগ্রহ করে মোহামেডান। এত অল্প রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ উইকেট খুইয়ে ১ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শেখ জামাল। তারা ১৪ ম্যাচ খেলে ৮ জয়, ৫ হারে ও ১ ড্রতে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে আছে। আর মোহামেডান ১৪ ম্যাচ খেলে ৬ জয়, ৭ হারে ও ১ ড্রতে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে আছে। এক কথায় বলা যায়, সুপার লিগ পর্বে এসে খেই হারিয়েছে মোহামেডান। সাদা-কালোর দলে সাকিব আল হাসান খেলছেন না যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ায়। চোটের কারণে নেই তাসকিন আহমেদও। এ দুজনের অনুপস্থিতিতে শক্তি হারিয়ে ফেলেছে মোহামেডান।
এর আগে গতকাল সকালে বিকেএসপিতে রেলিগেশন লিগের শেষ ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ সহজেই হারিয়েছে পারটেক্সকে। ওপেনার মেহেদী মারুফ ৯৪ ও জাকের আলির ৭৬ রানে রূপগঞ্জ গড়ে ২০০ রানের পাহাড়। টুর্নামেন্টের শেষদিকে এসে এই ম্যাচেই প্রথমবারের মতো দলীয় সংগ্রহ দুইশ ছাড়াল। পারটেক্স ৮ উইকেটে ১৭৩ রানের বেশি করতে পারেনি। ফলে রূপগঞ্জ পেয়েছেন ২৮ রানের জয়। তবে দল হেরে গেলেও জুটির রেকর্ড গড়েছেন পারটেক্সের দুই ব্যাটসম্যান। রূপগঞ্জের দেয়া পাহাড়সম লক্ষ্য টপকাতে নেমে রেকর্ড বইয়ে নাম তোলেন পারটেক্সের ইসহারুল ইসলাম ও জয়নুল ইসলাম। নবম উইকেট জুটিতে শেষ ৫ ওভারে তাণ্ডব চালান তারা। এ সময় ৬টি ছক্কা ও ৫টি চারের মারে স্কোর বোডে তোলেন ৭৩ রান। আর এর সুবাদেই গড়েন বিশ^রেকর্ড। এটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নবম উইকেট জুটির বিশ^রেকর্ড। নবম উইকেট জুটির আগের রেকর্ডটি ছিল কোরি অ্যান্ডারসন ও জশ ডেভির। এর আগে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বøাস্টে সারের বিপক্ষে সমারসটের হয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।
এদিকে গতকাল সুপার লিগের ম্যাচে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ৯টায় মুখোমুখি হয় মোহামেডান ও শেখ জামাল। এ ম্যাচে টস জিতে সাদা-কালোদের আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান শেখ জামাল অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করতে পারেনি মোহামেডান। শুরুতেই ওপেনার আব্দুল মাজিদ ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে এসে ইনিংস বড় করতে পারেননি ইরফান শুক্কুর। তিনি তারাহুড়ো করে খেলতে গিয়ে ১৭ রান করে আউট হন। তৃতীয় উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন পারভেজ হোসেন ইমন ও শামসুর রহমান। তবে ধীর গতিতে রান তোলেন দুজনই। ইমন ৩৫ বলে ৪৬ ও শামসুর ৪০ বলে ৪৯ রান করে আউট হলে এবাদত হোসেন ও জিয়াউর রহমানের বোলিং তোপে মোহামেডানের আর কোনো ব্যাটসম্যান সুবিধা করতে পারেননি। কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। শেখ জামালের হয়ে এবাদত ও জিয়াউর ৩টি করে উইকেট নেন।
জবাবে ১৩৪ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে ইনিংসের শুরুর ওভারেই আউট হয়ে যান শেখ জামালের ওপেনার সৈকত আলি। এরপর আশরাফুল ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটে ৫৫ রানের পার্টনারশিপে জয়ের ভিত শক্ত হয় ধানমন্ডির জায়ান্টদের। ইমরুল ২৫ রান করে আউট হওয়ার পর ৩৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন আশরাফুল। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজান ৪টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। পরে তানভীর হায়দারের ১৭ বলে ৩২ ও সোহানের অপরাজিত ৩১ বলে ৩৬ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ৭ উইকেট ও ৬ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় শেখ জামাল।
এছাড়া বিকেএসপিতে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দলপতি নাঈম হাসান। ম্যাচে আগে ব্যাট করে এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান তোলে তারা। উদ্বোধনি জুটিতেই ১৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন রূপগঞ্জের দুই ব্যাটসম্যান মেহেদী মারুফ ও জাকের আলি। দুজনই ফিফটির স্বাদ পান। তবে তিন অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি তারা। জাকের আলি ৪৮ বলে ৭৬ রান করে আউট হন। এরপর মেহেদী সাজঘরে ফেরেন ৯৪ রান করে। তিনি ৬৩ বলের ইনিংসটি সাজান ৯টি চার ও ৬টি ছয়ের মারে। এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২০০ রানের সংগ্রহ পায় রূপগঞ্জ।
জবাবে ২০১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য টপকাতে নেমে ১৫ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারানো পারটেক্স সংগ্রহ করে ১০০ রান। তখন নবম উইকেটে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ইসহারুল ও জয়নুল। শেষ ৫ ওভারে তাণ্ডব চালান তারা। এ সময় ৬টি ছক্কা ও ৫টি চারের মারে তোলেন ৭৩ রান। এতেই রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিলেন পারটেক্সের এই দুই ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নবম উইকেট জুটির বিশ^রেকর্ড গড়েন দুজন। সাতে নামা ইসহারুল অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ৩৮ রান করে। নয়ে খেলেতে নেমে পেসার জয়নুল খেলেন ৪ ছক্কায় ১৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। তবুও ১৭৩ রানে থামে পারটেক্সের ইনিংস। এতে ২৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এবার প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন হয়ে গেল পারটেক্সের। প্রথম পর্বের ১১ ম্যাচের সঙ্গে রেলিগেশন পর্বের ২ ম্যাচ, সবে মিলিয়ে ১৩ ম্যাচে কোনো জয়ের স্বাদ পায়নি দলটি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়