জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি : ডা. এস এ মালেকের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি

আগের সংবাদ

পল্টন ছেড়ে গোলাপবাগে বিএনপি : বিকাল থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের অবস্থান, রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

দেড় যুগেও সুপেয় পানি পায়নি বাঘা পৌরবাসী

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) থেকে : দেড় যুগের অধিক সময় পার হলেও বাঘা পৌর এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। যদিও এটি এখন প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে পর ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে পাম্পসহ মাটির নিচে পাইপলাইন বসানো হয়েছিল পৌর এলাকায় বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহের জন্য। নিয়োগ দেয়া হয়েছে চালক। কিন্তু এই পাইপের মাধ্যমে এক ফোটাও পানি পায়নি পৌরবাসী। ৭২ লাখ টাকার সেই পাইপলাইন মাটির নিচে রেখে নতুন করে আবার প্রায় ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে বাঘা পৌরসভার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পৌরবাসীর আক্ষেপ, নির্বাচনের পর নির্বাচন হচ্ছে, প্রকল্পের পর প্রকল্প আসছে, সুপেয় পানি আসছে না।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ২৪ জুন বাঘা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর ২০০০ সালের ২৬  সেপ্টেম্বর পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আক্কাছ আলীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান (তখন চেয়ারম্যান বলা হতো) নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির আব্দুর রাজ্জাক। ২০০৬ সালের ২৬ জুন দ্বিতীয় নির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাককে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের আক্কাছ আলী নির্বাচিত হন। সীমানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণে পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হয়। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাকের কাছে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আক্কাছ আলী। এই দীর্ঘ সময়ে ৭২ লাখ টাকার পাইপলাইন মাটির নিচেই থেকে যায়।
৭২ লাখ টাকার পাইপ লাইনের কাজের বিষয়ে বর্তমান মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার প্রথম মেয়াদকালের পর মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আক্কাছ আলী। তার সময়ে ড্রেনের কাজ করতে গিয়ে সব পাইপ কেটে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
বর্তমানে নতুন প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি ওভারহেড ট্যাঙ্কি নির্মাণের কাজ চলছে। আরো ৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। পৌর এলাকায় ৩২ কিলোমিটার পাইপ বসানো হবে। তার মধ্যে ১০০ মিটার পাইপ প্রস্তুত করা হয়েছে। বাঘা পৌর ভবনের পাশে একটি, উত্তর মিলিকবাঘায় একটি ও নারায়ণপুর বাজারে একটি পানি উৎপাদন নলকূপ বসানো হয়েছে। সবমিলে এই প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে।
আব্দুর রাজ্জাকের বসানো মাটির নিচের পাইপ নষ্ট করার ব্যাপারে আক্কাছ আলী বলেন, আব্দুর রাজ্জাক কোথায় পাইপ বসিয়েছিলেন তা জানা নেই। ড্রেন নির্মাণের সময় কোনো পাইপ নষ্ট করা হয়নি। তিনি বলেন, বাঘা পৌরসভায় সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য যে প্রকল্পের কাজ এখন চলছে, সেটি তার সময়ের প্রকল্প। এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাও ঠিকমতো করতে পারছেন না তারা ।
গতকাল বৃহস্পতিবার পৌর এলাকার গাঁওপাড়া মহল্লায় গিয়ে পানি সরবরাহের ওভারহেড ট্যাঙ্কি নির্র্মাণের কাজ করতে দেখা গেছে। কার্যালয় ও কর্মচারীদের থাকার জন্য পাশে একটি ভবন ও গুদামঘর ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
পাইপ বাসানোর কাজ এখনো শুরু হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক মুরাদ হোসেন বলেন, কাজ চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী জানান, পাইপ বসানোর পরেও বাড়ি পর্যন্ত পানি সরবরাহের অনেক কাজ বাকি ছিল। তার জন্য আরো টাকার প্রয়োজন ছিল। এই টাকা না পাওয়ায় প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সময়ের প্রকল্পের সুফল পায়নি পৌরবাসী।
পৌরসভার বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন বলেন, ওভারহেড ট্যাঙ্কি নির্মাণের কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়