মোজাম্মেল-প্রণয় সাক্ষাৎ : কলকাতার থিয়েটার রোডের সেই বাড়িটি চেয়েছে বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

কাদের সঙ্গে ডায়লগ করব? মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

পরের সংবাদ

উলিপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম থেকে : উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অপরাধে অবশেষে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা। মামলা দায়েরের খবরে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালান সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমান। তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক ও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল আটক করে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. পারভেজ নুর আলম ২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলো- মাইদুল ইসলাম, জিয়া মিয়া ও বাবু মিয়া। তাদের সবার বাড়ি হাতিয়ে ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ গ্রামে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাইদুল ইসলাম, জিয়া ও বাবুসহ ৫-৬ জনের একটি সিন্ডিকেট বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি অবৈধ বালুমহাল গড়ে তোলে অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। 
অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন ও নদীতে বেপরোয়া তৎপরতার কারণে এলাকাটির নদী তীরবর্তী বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ ব্রহ্মপুত্রের তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ে। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করে।
স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করে প্রতিকার দাবি করেন। এরপরই অভিযানে নামেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর। 
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেট সদস্যরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার গুনবাবুর চলমান তীর রক্ষা কাজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক বালু জেলা ও জেলার বাইরে নির্বিঘেœ বিক্রি করেন। 
অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রচার করত এসব বালু সদর উপজেলার মোগল বাসা এলাকার পাউবোর অন্য একটি তীর রক্ষা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় তাদের কতিপয় ট্রাকচালক ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টর’ কম্পিউটারে লেখা স্টিকার ব্যবহার করে বালু পাচার করছিল।
এলাকায় জনশ্রæতি রয়েছে, এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে নেপথ্যে সহযোগিতা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত জনৈক্য প্রকৌশলী ও কতিপয় কর্মচারী। ঘাটের স্থানীয় দোকানদার, আশপাশের লোকজন এবং পাথর ভাঙা শ্রমিকরাও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের শেখানো বুলি অনুযায়ী যে কেউ জিজ্ঞেস করলেই বলে দিত এসব বালু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্য একটি সাইডে যাচ্ছে।
এদিকে, অবৈধ বালু দিবারাত্রি ট্রাকযোগে পরিবহনের কারণে স্থানীয় পাকা রাস্তাগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামীণ এসব পাকা সড়ক দিয়ে অটোসহ যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে উলিপুর থানার ওসি শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং যে কোনো মূল্যে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়