জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

আগের সংবাদ

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে ফের জেলে পাঠানো হবে খালেদাকে

পরের সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতন : ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা মানিকগঞ্জে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান শফিক ও তার অনুসারীদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হলেও অভিযুক্তদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
গত মঙ্গলবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার চক মিরপুর ইউনিয়নের চক খরিচরণ এলাকায় সরকারি জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি সরজমিন পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলেই হামলার শিকার হন তারা। চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম (শফিক) তার অনুসারীদের নিয়ে অতর্কিত এই হামলা চালান। আহতরা হলেন স্থানীয় দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি রফিক খান এবং মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি খাববাব হোসেন ত্বোহা। এ ঘটনায় দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সুজন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় দৌলতপুর থানায় মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তার সঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন মিয়া, বিএনপি নেতা মো. রফিকসহ অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে টেনে-হিঁচড়ে বাজার সংলগ্ন একটি ভবনের পৃথক দুটি রুমে নিয়ে আটক করে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে অবৈধভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়ার চেষ্টা করেন ইউপি চেয়ারম্যান শফিক এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক আতাউর রহমান। ঘটনার বর্ণনা জানিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিক খান বলেন, ঘণ্টাব্যাপী চলে শারীরিক নির্যাতন, ধারণ করা হয় এসব ভিডিও। চাওয়া হয় চাঁদাবাজির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। অস্বীকৃতি জানালে বদ্ধ ঘরে চলে বেধড়ক নির্যাতন, যা ইউপি চেয়ারম্যানের সামনেই হচ্ছিল।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে থাকা ফোন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় চেয়ারম্যানের লোকজন। মুছে ফেলা হয় সব তথ্য। ফোন ফেরত পেলেও ব্যবহৃত ক্যামেরাটি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত শফিক চেয়ারম্যানের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, আমি ঘটনার শেষে সেখানে যাই। শফিক চেয়ারম্যানসহ সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই, বরং তাদের সহযোগিতা করেছি।
এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দৌলতপুর উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজা বলেন, অন্যায়কারী যেই হোক, আইন তার গতিতে চলবে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি করি। শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তীসহ সব সাংবাদিক। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি করে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়