ঢাবি প্রতিনিধি : বর্তমান পৃথিবীতে সাহিত্যের দুর্দশা দৃশ্যমান এবং এই দুর্দশা মূলত প্রযুক্তির কারণে নয় বরং পুঁজিবাদের কারণে তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র মিলনায়নে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে সাহিত্যের একটা দুর্দশা চলছে যা অস্বীকার করা যাবে না। লোকে বই পড়তে চায় না এবং বলে যে এর জন্য প্রযুক্তি দায়ী। তবে আমি বলবো, প্রযুক্তি এর জন্য দায়ী নয়। অতীতে তাকালে আমরা দেখব যে প্রযুক্তি সব সময় সাহিত্যকে সহযোগিতা করেছে। যখন কাগজ বা ছাপাখানা ছিল না, তখন প্রযুক্তিই কাগজ ও ছাপাখানা এনেছে। এরপরে যখন রেডিও এলো তখন ধারণা করা হলো সাহিত্যের বদলে এবার মানুষ রেডিও শুনবে, সাহিত্য পড়বে না। কিন্তু দেখা গেল রেডিও সাহিত্যকে ব্যবহার করছে। ঠিক একই রকমভাবে টেলিভিশনও সাহিত্যকে শেষ করতে পারেনি। কিন্তু, আজকের চলমান সাহিত্যের এই বিপদ প্রযুক্তির কারণে সৃষ্টি হয়নি বরং প্রযুক্তির ওপর যে পুঁজিবাদের আধিপত্য সেটার কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা যে দ্ব›দ্ব দেখতে চাই সেটা পুঁজিবাদের সঙ্গে সাহিত্যের দ্ব›দ্ব। আজকে মানুষ বই পড়তে না চায়, স্থ’ূল বিনোদনে ডুবে থাকে মাদকাসক্ত হয় তার প্রধান কারণ হলো পুঁজিবাদী দৌরাত্ম্য এবং এটা একটি চরম সংকট।
লেখক প্রগতি সংঘের কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কাজ হবে একটা সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করা। আমরা ইউরোপীয় রেনেসাঁসের কথা শুনেছি। বঙ্গীয় রেনেসাঁসের কথা শুনেছি সেই বঙ্গীয় রেনেসাঁস আমাদের জাগরণ এনে দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সহসম্পাদক অভিনু কিবরিয়া ইসলামের সঞ্চালনা ও সংগঠনটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া পিনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান হীরা, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর গৌতম।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।