প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
ফ্যাশন তখনই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় যদি তাতে সমকালীন রুচির প্রকাশ ঘটে। একারণেই দেশী ব্র্যান্ডগুলো পাশ্চাত্য ট্রেন্ড অনুসরন করে শীতের জন্য আভিজাত্যের মিশেলে তৈরি করেছে ফেস্টিভ, ফরমাল এবং স্ট্রিট বা বিজনেস ক্যাজুয়াল ফ্যাশন আউটফিট। গত কদিন দেশজুড়ে বেড়েছে মাঘের শীতের প্রকোপ। তাই আবার চাঙ্গা শীতের ফ্যাশন বাজার।
শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী, ডিজাইনার ও চেয়ারম্যান, জেন্টল পার্ক
দুনিয়া জুড়ে ফ্যাশন হাউজের দিকপালরা মাথা নষ্ট করা উইন্টার কালেকশন ২০২১/২২ নিয়ে অনেক বলে ফেলেছেন। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শীত যাবার সময়ও হয়ে গেছে। বড় সুবিধা হলো এখানে শীত পড়ে কম, তাই বলে শীতপোশাকের বাহারে কমতি নেই। কম ঠান্ডায় পরার উপযোগী করেই বানানো হচ্ছে এ সময়ের শীতের পোশাক। পাশ্চাত্য ফ্যাশনের প্রভাব এখানে সবসময়। পাশ্চাত্য ফ্যাশন ট্রেন্ডে মেয়েদের জন্য ফোকাস ইন রেট্রো স্টাইল। পঞ্চাশ আর আশি দশকের জ্যাকেট, স্যুট, টপসের ফেমেনিন স্টাইলকে মর্ডানাইজ করা হয়েছে। সিøক স্কার্ট বা টপসের বেশির ভাগ জুড়ে মেটালিক ডিটেইলস। পাঙ্ক আর রক এর অনুপ্রেরণা। অ্যাবস্ট্র্যাক্ট এপরোচে মোটিফ, প্যার্টানের লাইন, স্ট্রাইপের উপস্থাপনার মুনশিয়ানা নজর কাড়ে। কমফি আর কুল পায়জামা স্টাইল ইন। এটা খুব ক্রিয়েটিভ আর ইনভেটিভ অপসান।
এবার দেশীয় শীতের ট্রেন্ডে কাপড়ের নানা বৈচিত্র্য দেখা যাবে, এমন জানালেন ডিজাইনাররা। নানা নকশার ‘আউটার উইন্টার’ অর্থাৎ অন্য পোশাকের ওপর পরার মতো আরেকটি পোশাক যেমন: কোট, জ্যাকেট, ব্লেজার, সোয়াটার, শ্রাগ বা কটি ইত্যাদি বাজারে আসা শুরু হয়েছে এর মধ্যেই। পশ্চিমা ট্রেন্ড মেনেই নকশা করা হচ্ছে এসবের, তবে কাপড়টা এ দেশের আবহাওয়া উপযোগী। যেমন উল বা ফ্লিস নয় বরং সুতি ও অ্যাক্রিলিক মিশ্রণে সোয়েটার বানিয়েছে ক্যাটস আই। ছেলেদের উইন্টার ফ্যাশনে স্কিনি টেইলরের প্রভাব লক্ষনীয়। স্যুটে সিøম কাট আর ভিনটেজ যুগকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা। নীল, গ্রে, সবুজ, সাদা, কালো আর ক্যামেল আর সব মাস্কুলিন রং ছেলেদের উইন্টার ক্যাটওর্য়াক ডমিনেট করছে। ট্রেডিশনাল চেক, স্ট্রাইপ এর পাশাপাশি টুইড, নিটওয়্যার, স্পোর্টসওয়্যার, জাম্পার এই শীতকে উষ্ণ করে তুলবে। ৯০ এর স্লোগান টপ হাজির সঙ্গে স্লুডি, সানগøাস। ডেনিমের রমরমা কালেকশন হাইস্ট্রিট ফ্যাশন হাউসগুলোতে। অভিজাত বাহ্যিক লুক সাথে আরামদায়ক উপস্থাপনা সবসময়ে ক্যাটস আইয়ের ব্লেজার আর কোটে দিয়েছে বাড়তি গ্রহনযোগ্যতা। সব সময় ফরমাল নয়, একটু ক্যাজুয়াল ধাঁচেও তৈরি হচ্ছে এখনকার ব্লেজারগুলো। যেভাবে বা যেখানেই পরুন না কেন, ব্লেজারের কাটিং ও ফিটিংটা কিন্তু বেশি জরুরি। কাঁধ ঝুলে যাওয়া যেমন চলবে না, তেমনি আবার হাত যেখানে শেষ এর থেকে আধা ইঞ্চির মতো শার্টের কাফ দেখা যাওয়া চাই। ব্লেজারের ফ্যাশনে এখন চলছে স্লিম ফিট ফ্যাশন। দুই বা তিন বাটনের ব্লেজারই সবসময় চলছে। তবে এক বাটনের ব্লেজারও পরছেন ফ্যাশনেবল অনেকে। নিচে রাউন্ড শেপটাই এখন সবার পছন্দ। পেছনে দুই প্লিট ব্যবহার হচ্ছে এখনকার ফ্যাশনে। শারীরিক গঠন মোটা হলে এক বোতাম, চিকন ও মাঝারি গড়ন হলে দুই-তিন বোতাম দিয়ে ব্লেজার পরলে ভালো দেখাবে। তবে ব্লেজার বা কোট পরার সময় শরীরের গঠন ও মুখের গড়ন বিবেচনা করা উচিত। মেয়েদের কাটিংয়ে স্বাতন্ত্র্য আছে, তবে ডিজাইনে ছেলে বা মেয়েদের তেমন পার্থক্য নেই।
শীতে পলিউল বা একটু ভারী ফেব্রিক ব্লেজারের চাহিদা বেশি। সুতি কাপড়ের ব্লেজার শীত-গরম সব সময়ই আরামদায়ক। পাশাপাশি ইতালিয়ান ভারসেস, ডিক জ্যাম, ডরমেনি, রেমি কটন, টুইড কাপড়ে ব্লেজারেরও চাহিদা রয়েছে। রিংকল ফ্রি উলেন কাপড়, সফট লেদার, ডেনিমের কদরও রয়েছে এখন।
এদিকে, গত কয়েক বছর ধরে শীতের পোশাকের জায়গা দখল করে আছে হুডি বা পুলওভার। বছর বছর ডিজাইন আর কাটিং পরিবর্তন করে চলছে এটি। কাপড়েও অবশ্য পরিবর্তন আনা হয়। এ ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ই ‘প্রথম’ স্থান অধিকার করে আছে। সোয়েটার ও জ্যাকেটও এসেছে পরিবর্তন, সিম্পল পাটার্নে নিরীক্ষাধর্মী কাজ বেড়েছে। মেন্ডারিনভেস্টও বেশ চলছে শীতের গর্জাস পার্টিগুলোতে। বেশ কবছর ধরে সাধারণ কোট থেকে চার ইঞ্চি লম্বা প্রিন্স কোটও তরুণেরা বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন।
পুনঃশ্চ,
মিঠে রোদ, বাতাসে হিমেল পরশ ছাড়া শীতের কথা ভাবাই যায় না। আবার শীতের রাত মানেই পার্টি, হই-হুল্লোড়। তাই শীতের পোশাক কেনার আগে দু’দিকটাই ভাবুন। ম্যাড় ম্যাড়ে নয় বরং উজ্জ্বল রংয়ের শীতের পোশাকই এখন ফ্যাশনে ইন।
পোশাক ও ছবি : জেন্টল পার্ক
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।