এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

রঙে বিপরীত প্রতিদিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বদলে গেছে মৌসুম। বদল প্রতিদিনের পোশাকেও। শীত না আসলেও শীত শীত গরমের এই সময়ে পোশাকের ধরন ও রঙেও পাওয়া যায় উষ্ণতা। প্রকৃতির রং এখন কিছুটা রুক্ষ হলেও পোশাকের রঙে কিন্তু থাকে উৎসবমুখরতা। প্রতিদিনকার স্ট্রিট ফ্যাশনে তাই এখনো গ্রীষ্মের পোশাকের আধিপত্য থাকলেও ফ্যাশননিস্তাদের কাছে পোশাকের রঙ ব্যবহারে দেখা যাচ্ছে কনস্ট্রাস্ট বা বিপরীত রঙ ব্যবহারের আগ্রহ।
ফ্যাশনে নিত্যনতুন যুক্ত হচ্ছে নানা বিষয়। কখনও বা প্যাটার্নে, কখনও বা ডিজাইনে, কখনও বা কাটের ক্ষেত্রে এসেছে বৈচিত্র্য। বাদ যায়নি রঙও। এখন শুধু নির্দিষ্ট কিছু রঙের মধ্যেই সীমাবদ্ধতা নেই, বরং সব রঙ বিভিন্ন শেড নিয়ে হাজির। কোন শেড কখন মানানসই হবে এগুলো নিয়ে হয়েছে নানা কাজ। তবে, যা খুশি রঙ পরে বেরলে তো আপনাকে আর ফ্যাশনেবল বলা যাবে না অবশ্যই তা মানাতে হবে এবং থাকতে হবে ট্রেন্ডের সাথে। তাই ফ্যাশনে দেখাতে হবে মুন্সিয়ানা। প্রায় দেখা যায়, তরুণারা শাড়িতে কনট্রাস্ট ব্লাউজ ব্যবহার করে থাকেন। যেমন পার্পেল পাড় সাদা শাড়ির সঙ্গে ডিপ পার্পেল ব্লাউজ কিংবা সালোয়ার-কামিজের ক্ষেত্রেও কামিজ সাদা হলে ওড়না বেশ রঙিন হয়। তবে তাই বলে ভাববেন না যে পোশাকের প্রতিটি অংশে বৈশাদৃশ্য আনা শুধু মেয়েদের কাজ।
ছেলেরাও বেশ সচেতন কোন রঙের শার্টের সঙ্গে কোন রঙের প্যান্ট, ঘড়ির স্ট্রাইপ ভালো মানাবে তা নিয়ে। এধরনের ‘কালার কম্বিনেশন’ এ যাদের পছন্দ তারা রঙকে প্রাধান্য দিয়ে একই রঙের শার্ট-প্যান্ট পরেন। যেমন নেভি ব্লæ জিন্সের সঙ্গে অনেকে নীল শার্ট বা টি-শার্ট পরেন। দেখতে মন্দ লাগে না। তবে আরও আকর্ষণীয়ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাইলে রঙের সঙ্গে রং মেলানো শিখতে পারেন। রঙচটা নীল জিন্সের সঙ্গে যেকোনো রঙের একটি টি-শার্ট পরার দিন শেষ। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ছেলেরা এখন পোশাক নিয়ে বেশি সচেতন।
কোন রঙের সঙ্গে কোন রং ভালো লাগবে, তা প্রয়োগ করাও একধরনের আর্ট। কন্ট্রাস্ট মানে যেকোনো দুটি রং বেছে নেওয়ার চেয়ে একটু বেশি কিছু। ফরমাল লুকের ক্ষেত্রে শার্টের রং গাঢ় হলে প্যান্ট হতে হবে হালকা রঙের। এ ক্ষেত্রে কালো এমন একটি রং যার সঙ্গে প্রায় সবকিছুই পরা যায়। তবে হালকা রং বেশি ভালো লাগে। কালো প্যান্টের সঙ্গে কালো শার্ট যতটা মানায় তার চেয়ে ঢের বেশি ভালো লাগবে সাদা, হালকা গোলাপি, সফট ইন্ডিগো। ফ্যাকাশে রঙের ভক্তরা জলপাই রঙের শার্ট বা টি-শার্টের সঙ্গে পরতে পারেন ধূসর রঙের প্যান্ট।
এক জরিপে দেখা গেছে, ছেলে ও মেয়েদের পছন্দের রং হলো নীল। মেয়েদের কাছে সবচেয়ে অপছন্দের রং কমলা। ছেলেরা বেশি অপছন্দ করে মেরুন। তবে একবার মেরুন শার্টের সঙ্গে ধূসর রঙের প্যান্ট পরে দেখুন তো কেমন লাগে। গোলাপি মেয়েদের রঙ এমন ধারণা থেকে থাকলে ছাইরঙা প্যান্টের সঙ্গে গোলাপি শার্ট পরে দেখুন। খুবই হালকা বেবি পিংকে আপনাকে দেখতে কেমন লাগতে পারে, সে ধারণা নিতে ইনস্টাগ্রামে স্ট্রিট স্টাইল ফটো লিখে সার্চ দিতে পারেন।

ছেলেদের পোশাকে রঙ-বৈচিত্র্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জেন্টল পার্কের চেয়ারম্যান ও চিফ ডিজাইনার শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী বাবু বলেন, ‘কন্ট্রাস্ট বা বিপরীত রঙের মিল দিয়ে পোশাকে আপনাকে মানিয়েছে কি না সেটা বিবেচ্য। কন্ট্রাস্ট পোশাকের ক্ষেত্রে বয়স কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো স্বাচ্ছন্দ্য আর পরিবেশ উপযোগী করে নিজেকে উপস্থাপন। পোশাকটি যেন সঠিক মাপমতো এবং আরামদায়ক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা। কন্ট্রাস্ট পোশাক পরার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই, নেই নির্দিষ্ট কালার কোড। নেই কেতাবি কোন ট্রেন্ড যেটা আপনাকে মানতেই হবে। পুরুষের ক্যাজুয়াল রেডি টু ওয়্যারেই শুধু কন্ট্রাস্ট পোশাক হিসেবে বেশি মানানসই। ইদানীং ন্যারো শেপে কালার কন্ট্রাস্ট বটমে বেশ চলছে। তবে অবশ্যই রুচি, পরিবেশ এবং আপনার গায়ের রঙের ধরন বুঝে পোশাক নির্বাচন প্রয়োজন। প্যাটার্ন স্লিমফিট বা রেগুলার ফিট হতে পারে, তাই গাঢ় বা হালকা রঙ নির্বাচনে নিজের পছন্দকেই প্রাধান্য দিন। প্রতিটি ঋতুর নিজস্ব রঙ আছে। সে রঙগুলো প্রকৃতিতে ফুটে ওঠে। ঋতুগত সে রঙগুলো পোশাকে ব্যবহার করুন। যেমন, গরমে অবশ্যই হালকা কন্ট্রাস্টের পোশাক যতটা মানানসই শীতে তার বিপরীত। শীতে পরতে পারবেন গাঢ় কন্ট্রাস্টের পোশাক।

আপনার গায়ের রঙ, চুলের রঙ বা চোখের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কন্ট্রাস্ট কালার কোড বেছে নিতে পারেন। যেমন গ্রের নানা শেডের সঙ্গে বেছে নিতে পারেন লাল কন্ট্রাস্ট। স্ট্রাইপ ক্লোথিংয়ে নীল, খাকি রঙের শেড বেশ ট্রেন্ডি। গাঢ় লালের সঙ্গে লালের হালকা শেড বা খাকি রঙের শেড মানানসই। গাঢ় রঙ দিয়েও মেলাতে পারেন কন্ট্রাস্ট স্ট্রিট ওয়্যার কম্বিনেশন। তবে তিন ধরনের কন্ট্রাস্ট থেকেই মেলাতে হবে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।

রঙ শুধু পোশাককেই রঙিন করে না। এটি আপনার ব্যক্তিত্বকেও প্রকাশ করে। তাই সঠিক রঙ বেছে নেওয়া জরুরি। আর বিপরীত রঙের পোশাকের ক্ষেত্রে সঠিক রঙ বেছে নেওয়া আরও জরুরি বিষয়।

এখনকার আবহাওয়ায় রাতের দিকে ঠান্ডার আমেজটা একটু বেশি থাকে। আবার দুপুরের দিকে তা একটু কমই। এজন্য দুপুরের দাওয়াত বা বিকেলের আড্ডাতে পোশাকের রঙ কিছুটা ভিন্ন হওয়া চাই এমনটাই বলছিলেন আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজের উদ্যেক্তা তাসলিমা মলি। মেয়েদের ফ্যাশন নিয়ে তিনি জানান, ‘দুপুরের ছোট কোনো দাওয়াতে লাল, ম্যাজেন্টা, গোলাপি বা যেকোনো নিয়ন রঙের ডলার, এমব্রয়ডারি বা খারি করা কুর্তা, টপস ও ট্রেন্ডি বটম ভালো লাগবে। সে ক্ষেত্রে একটু মোটা বা ভারী সুতি ও হাফ সিল্কের কাপড়ের পোশাক বেশ দৃষ্টিনন্দন দেখাবে।
তিনি আরো বলেন, এ সময়ে হালকা রঙের পোশাক একেবারেই মানানসই নয়। আবার এক রঙা গাঢ় কাপড়ের পোশাক অনেক সময়ে ফ্যাশনেবল দেখায় না। তাই চেক বা স্ট্রাইপ না হলে ব্লকের কাজ করা রঙিন ও উজ্জ্বল রঙের পোশাক ফ্যাশনের পাশাপাশি উষ্ণ ভাব দেবে। কালো কাপড়ের ওপর গাঢ় নীল, সবুজ, বেগুনি রঙের চেক বা স্ট্রাইপ বেশ ভালো দেখায়। এ ছাড়া হলুদ, কমলা, ম্যাজেন্টা রঙের ব্লকের পোশাকে উষ্ণতার সঙ্গে চলে আসবে সজীবতা।
পোশাক : জেন্টল পার্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়