এম কে রানা, বরিশাল থেকে : টানা কয়েকদিন চলছে তীব্র তাপদাহ। এই তাপে পুড়তে বাদ যায়নি বরিশাল নগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার জনপদ। ভয়ানক গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। এতে বেশি অসহায় হয়ে পড়েছেন দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ। জীবিকার টানে এই তাপদাহে ঘরের বাইরে তাদের বের হতেই হচ্ছে। গরমের মধ্যে বেশিক্ষণ বাইরে থাকায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। স্বস্তির আশায় মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন পার্কে, রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়। এদিকে তাপমাত্রা নিয়ে নেই কোনো ভালো খবর। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বরিশালে হঠাৎ বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাবে না। উল্টো বাড়তে পারে তাপমাত্রা।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল বলেন, ২০১২ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এবার বরিশালে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে গত ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার। ওইদিন তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ৩৭.৬, রবিবার ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে। বরিশালে আগের মতো বড়-বড় গাছ নেই, পুকুর নেই, খালেরও পানি প্রবাহ নেই। ফলে বাতাসের সঙ্গে ময়েশ্চার বহন করে না, সবকিছু শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় গরমের তীব্রতা বাড়ছে। আজ শুক্রবারের পর থেকে তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। জানা যায়, বৈশাখ মাস শুরুর পর থেকেই বরিশালে বইছে তীব্র তাপদাহ। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় মানুষ। গরমে কাজ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুর থেকে শুরু করে স্বল্পআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে অন্য সবার চেয়ে বেশি। রিকশাচালক বেল্লাল হোসেন বলেন, গরম আর শীত বলে কিছু নেই। আমাদের সবসময়ই পেটের তাগিদে রাস্তায় থাকতে হয়। গরমের কারণে যাত্রীও কমে গেছে বলেন তিনি। চিকিৎসকদের মতে, তীব্র গরমে পানিশূন্যতা কিংবা হিটস্ট্রোক হতে পারে। এক্ষেত্রে একটানা কাজ না করে, বিশ্রাম নিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানান চিকিৎসকরা। পাশাপাশি পানিশূন্যতা এড়াতে খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।